শ্রীপুরে অভিযোগের শেষ নেই মাংস ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। Magura news

মহসিন মোল্যা, বিশেষ প্রতিবেদক-

শ্রীপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী লাঙ্গলবাঁধ বাজারের মাংস ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। তাছাড়া উপজেলার বিভিন্ন বাজারগুলোর চিত্র এমনই ৷ প্রতিনিয়ত গর্ভবতী গাভী, কুকুরে কামড়ানো ক্ষেপে যাওয়া গরু, রোগাক্রান্ত গরুসহ ত্রুটিপূর্ণ গরুর মাংস দীর্ঘদিন যাবত বিক্রি করে আসছে এ সকল ব্যবসায়ীরা। এমনকি চোরাই গরু জবাই করে বিক্রির অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। তাছাড়া গরু জবাইয়ের নির্দিষ্ট মৌলভী থাকার কথা থাকলেও তা নেই। ডাক্তারী পরীক্ষা ছাড়াই জবাই করা হচ্ছে রোগাক্রান্ত গরু। বাজারে গরু জবাইয়ের নির্দিষ্ট স্থান থাকতেও প্রতিনিয়ত বাইরে থেকে গরু জবাই করে বাজারে এনে বিক্রি করছে এ সকল ব্যবসায়ীরা। জাহিদুল, বকুল, ফারুকসহ ২২ জন ব্যবসায়ী গড়ে তুলেছে একটি সিন্ডিকেট। তারা একই দরে মাংস বিক্রি করে। এতে ক্রেতারা নিরুপায় হয়ে তাদের নির্ধারিত দামেই মাংস কিনতে বাধ্য হচ্ছে। তাদের নিকট ক্রেতারা জিম্মি হয়ে পড়েছে। ব্যবসায়ীদের দাবি প্রতি সপ্তাহে উপজেলা সেনেটারী ইন্সপেক্টর ও স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িকে মাসোয়ারা দিতে হয় তাদের।

তবে মাসোয়ারার বিষয় অস্বীকার করে লাঙ্গলবাঁধ পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত এএসআই কৌশিক জানান, ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কোন মাসোয়ারা নেওয়া হয় না। তবে আমাদের কাছ থেকে দাম কম নেন তারা।

সেনেটারি ইন্সপেক্টর অচিন্ত কুমার সাহা বলেন, তাদের কাছ থেকে কোন কিছু নেওয়া হয়না। অভিযোগের বিষয়গুলো আমার জানার বাইরে। সারাক্ষণ আমরা সেখানে থাকতে পারিনা। বিষয়টি জানলাম তদন্ত করে দেখবো।

রোববার সরেজমিনে ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন সময় ক্ষেপা গরু, গর্ভবতী গাভী, দূর্ঘটনায় ভাঙা গরু, পুড়ে যাওয়া গরু, রোগাক্রান্ত গরু জবাই করে বিক্রি করে। বাজারের মধ্যে গরু জবাইয়ের জায়গা হওয়ায় বাজারে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়। খুব ভোরে তারা গরু জবাই করে। তখন তারা ছাড়া কেউ থাকে না। নিজেরাই গরু জবাই করে। ডাক্তারী পরীক্ষার নিয়ম থাকলেও গরুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় না। আল্লাহই জানে তারা আমাদের কি খাওয়াচ্ছে! রোবরার দুপুরে হঠাৎ ভ্যানে বাচ্চু মিয়ার দোকানে বস্তায় মোড়ানো কিছু মাংস আসে। এ সময় ভ্যান চালককে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, এই গরু ধলহরা জবাই করা হয়েছে, সেখান থেকে তিনি নিয়ে আসছেন।

কিন্তু ব্যবসায়ী বাচ্চু মিয়ার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, গরুটি গোবিন্দপুর জবাই করা হয়। সেখানে একটি বায়না ছিল। সেখানে দেওয়ার পর যা অবশিষ্ট আছে তাই এখানে নিয়ে আসছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী জানান, আমাকে ওই গরুর গোশত নেওয়ার জন্য ফোন করেছিল। কিন্তু রোগা গরু বলে আমি গোশত নেয়নি।

ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গরু আমরা বাজারেই জবাই করি। বাইরে বায়না থাকলে সেখানে গরু জবাই করা হয়। বাকি গোশত বাজারে এনে বিক্রি করি। নিজেরাই গরু জবাই করি। আগে প্রতিনিয়ত গরু জবাইয়ের আগে ডাক্তারী পরীক্ষা করা হত। ৬ থেকে ৭ বছর গরুর ডাক্তারী কোন পরীক্ষা করা হয় না।

ক্ষেপা ও রোগাক্রান্ত গরু জবাই করে বিক্রির বিষয় স্বীকার করে মাংস ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম জানান, এ বাজারে এমনটি হয়েছে। এখনো হচ্ছে, তবে আমারা এগুলো করি না।

লাঙ্গলবাঁধ বাজার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হালিম মোল্যা বলেন, এমন অভিযোগ আগেও শুনেছি। স্বাস্থ্য সম্মত মাংস বিক্রি হবে এটাই আমরা চাই। বিষয়টি যদি এমনই হয় আপনারা প্রশাসনকে জানান। আমারও আপনাদের সাথে আছি।

September ২০২৩
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Aug    
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০  

ফেসবুকে আমরা

বিভাগ

দিনপঞ্জিকা

September ২০২৩
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Aug    
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০  
%d bloggers like this: