শ্রীপুরে পর্যাপ্ত পানির অভাবে পাট নিয়ে বিপাকে চাষিরা। Magura news

মহসিন মোল্যা, বিশেষ প্রতিবেদক-

শ্রীপুরে প্রচণ্ড খড়ায় ক্ষেতেই শুকিয়ে মরে যাচ্ছে পাট। পানির অভাবে পাট পঁচাতে না পেরে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা। খালে বিলে পানি না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে তারা। বর্ষার ভরা মৌসুমেও বৃষ্টি না হওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছে পাট চাষিরা। এতে স্বাভাবিক খরচের চেয়ে বেশি খরচ হওয়াসহ পাটের গুনগত মান কমছে।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, এ বছর চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১১ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ১ এক হাজার ৬৫ হেক্টর জমিতে বেশি পাটের আবাদ হয়েছে।

No description available.

উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, পানি না থাকায় কৃষকরাই চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। উপজেলার কুমার নদ, মাছ চাষের পুকুরে, খালে, বিলে, কোথাও পর্যাপ্ত পানি না থাকায় পাট পঁচাতে পারছে না তারা। কোনো উপায় না পেয়ে কৃষকরা পাট কেটে ক্ষেতেই ফেলে রাখছেন। অনেকে বৃষ্টির আশায় পাট না কেটে রেখে দিচ্ছে। এছাড়া মাছ চাষের পুুকুরে ও ডোবায় গাদাগাদি করে পাট জাগ দিচ্ছেন। দূরদূরান্ত থেকে গরু, মহিষ ও ঘোড়ার গাড়ির পাশাাপাশি নছিমন, ভ্যানসহ বিভিন্ন উপায়ে কুমার নদে পাট জাগ দিচ্ছেন। তবে পাটের ফলন ভালো হলেও পর্যাপ্ত পানির অভাব, শ্রমিকের চড়া দাম ও পরিবহন খরচ বেশি হওয়ায় উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছে পাট চাষিরা।

উপজেলার হোগলডাঙ্গা গ্রামের পাট চাষি সাইফুল ইসলাম বলেন, এ বছর বৃষ্টির পরিমাণ খুবই কম, আষাঢ় মাস শেষ হয়ে গেছে এখনো খালে বিলে কোথায়ও পানি নেই। বাড়ির পাশে ডোবা এবং মাছ চাষের পুকুরে সেচ মেশিনের মাধ্যমে পানি তুলে সামান্য পানিতে গাদাগাদি করে পাট জাগ দিতে হচ্ছে। কম পানিতে পাট জাগ দেওয়ায় পাটের আঁশ কালো হয় বলে তা কম দামে বিক্রি করতে হয়। পাটের ফলন এবার ভালো হলেও পর্যাপ্ত পানির অভাবে আঁশ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। গতবছর ও যে জমিতে পাট কেটেছিলাম সেই জমিতেই পাট জাগ দিতে পেরেছিলাম।

মদনপুর গ্রামের পাট চাষি নবুওয়াত মোল্লা বলেন, এ বছর আমি ৩’শ শতাংশের মত জমি পাট চাষ করেছি। প্রচন্ড খরাই পাট মরে যাচ্ছে, পানির অভাবে কাটা পাট শুকিয়ে যাচ্ছে। বিলে কোন পানি নেই, তাই বাধ্য হয়েই সব পাট কুমার নদে নিতে হচ্ছে। পাট চাষে কোন লাভ নেই। প্রথম থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত হিসেব করলে বরং লোকসানই হয়। আর পাট চাষে তো প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়।

No description available.

পাট অধিদপ্তরের উপজেলা পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. সাদ্দাম হোসেন বলেন, বর্তমানে পাট পঁচানোর আধুনিক কোনো ব্যবস্থা হাতে নেই। উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর পাট ও পাট বীজ উৎপাদন এবং সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় উপজেলায় (২০২২-২০২৩ ) অর্থ বছরে ৩ হাজার আর্দশ আঁশ পাট উৎপাদনকারী চাষিদের বিনামূল্যে পাট বীজ ও রাসায়নিক সার প্রদান করা হয়েছে। পাট উৎপাদন বৃদ্ধি পেলেও বৃষ্টির পানি না হওয়ায় পাট জাগ দেওয়া নিয়ে পাট চাষিরা বিপাকে আছে। পাট চাষিরা পানির অভাবে পাট কাটতে পারছে না। পাট জাগ দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত জলাধার নেই। যদি সরকারি খাস জমিতে জলাধার তৈরি করে কষকের পাট জাগ দেওয়ার ব্যবস্থা করা যায় তাহলে উপজেলার পাট উৎপাদনকারী চাষিদের উপকার হয়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সালমা জাহান নিপা বলেন, খালে বিলে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় কৃষকেরা পাট জাগ দেওয়া নিয়ে কিছুটা সমস্যায় পড়েছেন। পাট কাটা দেরিতে হওয়ায় আমন আবাদ নিয়ে এখন কৃষকেরা বিড়ম্বনায় পড়ছেন। আশেপাশে পানি না পাওয়ায় অনেক দূরে বহন করে নিয়ে পাট জাগে ফেলতে হচ্ছে বলে কৃষকদের পাট উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। পাটের ভালো দাম না পেলে লোকসান গুনতে হবে কৃষকদের।

May ২০২৩
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Apr    
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০৩১  

ফেসবুকে আমরা

বিভাগ

দিনপঞ্জিকা

May ২০২৩
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Apr    
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০৩১  
%d bloggers like this: