মনিরুল ইসলাম, বিশেষ প্রতিবেদক-
তীব্র দাবদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত। তার ওপর আবার ঘন ঘন লোডশেডিং। ফলে গরমে হাঁসফাঁস করছেন মাগুরার শালিখা উপজেলার কর্মব্যস্ত মানুষ। এ সময় শরীর শীতল করতে ব্যবহার করছেন তালগাছের পাতা দিয়ে তৈরি হাতপাখা।
সরেজমিনে উপজেলার বুনাগাতী, আড়পাড়া,সীমাখালী, শতখালী, শালিখাসহ বিভিন্ন এলাকার বাজারে দেখা গেছে, প্রতিটি হাতপাখা বিক্রি করা হচ্ছে ৫০-৮০ টাকা। কিছুদিন আগেও এই পাখা ২০-৩০ টাকায় বিক্রি হতো।
জানা গেছে, তালগাছের পাতা দিয়ে এক বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি এই হাতপাখা গ্রামীণ জনজীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। বৈদ্যুতিক পাখার বিকল্প হিসেবে তালপাখার জুরি নেই সুদীর্ঘকাল থেকে। তালগাছের কাণ্ডসহ পাতা কেটে রোদে শুকিয়ে বাঁশের শলা ও সুতা দিয়ে এক বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি করা হয় এই হাতপাখা।
পাখা বিক্রেতা সুধীর বিশ্বাস বলেন, ‘আমি পাঁচ বছর ধরে পাখা বিক্রি করছি। গত কয়েক বছরের চেয়ে এই বছর অনেক বেশি পাখা বিক্রি হয়েছে। এতে আর্থিক বেশ লাভ হয়েছে।’
আরেক পাখা বিক্রেতা অজিৎ বিশ্বাস বলেন, ‘অন্য ব্যবসায়ের পাশাপাশি গরমের সিজন এলেই পাখা বিক্রি করে কিছু টাকা আয় করতে পারি। তবে অন্যান্য দ্রব্যের তুলনায় পাখার দাম কম থাকায় তা আর এ বছর হবে না।’
তবে এক পাখা ক্রেতা জানান, বৈদ্যুতিক পাখার বিকল্প হিসেবে তালপাখা ব্যবহার করেন তারা। পাশাপাশি ২০ টাকার পাখা ৮০ টাকায় বিক্রি হওয়ায় সুলভ মূল্যে পাখা কেনা অনেক কঠিন হয়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ তাদের। প্রতি বুধ ও শনিবার উপজেলা সদর আড়পাড়া বাজারে চলে তালপাখা বিক্রির ধুম।
শিক্ষক ও গবেষক শ্রী ইন্দ্রনীল বলেন, লোডশেডিংয়ের এই বিরূপ পরিবেশ শীতল করতে তালপাখার জুরি নেই। তাই এই গরমে হতদরিদ্র ও ছিন্নমূল শিশু, রোগাক্রান্ত ব্যক্তিদের স্বস্তি দিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে সুলভ বা বিনা মূল্যে জনপ্রতি একটি করে হাতপাখা দেওয়ার আহ্বান জানাই।