বিশেষ প্রতিবেদক (মহম্মদপুর)-
মাগুরা সদর উপজেলার বাসিন্দা রিপন বিশ্বাস (৩৫) নিখোঁজ রয়েছে ৯ দিন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাঁর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। ওষুধ কোম্পানির ওই ব্যবস্থাপক কীভাবে নিখোঁজ হলেন, নয় দিন পার হলেও তা পরিবারের অজানা। গত ৩০ জানুয়ারি রাত থেকে নিখোঁজ তিনি। সে একটি ওষুধ কোম্পানির ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারীতে আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
জানা যায়, রিপন বিশ্বাসের বাড়ি মাগুরা সদর উপজেলার আঠারোখাদা ইউনিয়নের কৃষ্ণবিলা গ্রামে। গত ৩০ জানুয়ারি রাতে মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার শেখ হাসিনা সেতুর ওপর থেকে রিপন বিশ্বাসের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও ব্যাগ উদ্ধার করে পুলিশ। সেদিন থেকেই বন্ধ রয়েছে তাঁর মুঠোফোন নম্বর। পরে এ নিয়ে মহম্মদপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন রিপনের স্ত্রী শিপ্রা বিশ্বাস।
রিপনের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ৯ বছর ধরে বোয়ালমারী এলাকায় বিকন ফার্মায় চাকরি করছিলেন রিপন। ৩০ জানুয়ারি শাশুড়ি অসুস্থ থাকায় তাঁর মাগুরায় আসার কথা ছিল। বিকেলে স্ত্রীর সঙ্গে মুঠোফোনে এ নিয়ে তাঁর কথা হয়। তবে সন্ধ্যা থেকে তাঁর মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। ৩০ জানুয়ারি রাতে তার পরিবার খবর পায় রিপন মহম্মদপুর শেখ হাসিনা সেতুর উপর সড়ক দূর্ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু তার মটরসাইকেল পড়ে থাকলেও তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি।
মহম্মদপুর ও বোয়ালমারীকে সংযুক্তকারী মধুমতি নদীতে নির্মিত শেখ হাসিনা সেতুর ওপর পড়ে ছিল একটি ব্যাগ, মোটরসাইকেল ও হেলমেট। তবে গত নয় দিনেও উদ্ধার হয়নি নিখোঁজ রিপন। নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে মধুমতি নদীতে উদ্ধারকর্মীরা কয়েক দিন ধরে উদ্ধার কার্যক্রম চালিয়েছে তবে রিপনের সন্ধান মেলেনি।
স্থানীয়রা জানান, মোটরসাইকেলটি সেতুর রেলিংয়ের পাশে পড়ে ছিল। তার পাশে ছিল একটি হেলমেট ও ব্যাগ। পুলিশ সব উদ্ধার করেছে। প্রাথমিক ধারণা মতে, রিপন ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তবে কেউ কেউ বলছেন, রিপন নদীতে পড়ে যেতে পারেন। সেই সন্দেহে গত সোমবার দুপুরে মহম্মদপুর ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল মধুমতি নদীতে খোঁজ করেও তাকে উদ্ধার করতে পারেনি।
গত নয় দিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও কোথাও রিপপনের খোঁজ পায়নি হতদরিদ্র কৃষক পরিবারটি। পুলিশও এখন পর্যন্ত কোনো সন্ধান দিতে পারেনি। তার পরিবার পুলিশের তৎপরতা নিয়ে আশাহত।
রিপনের স্ত্রী শিপ্রা বিশ্বাস বলেন, তাঁর জানা মতে রিপনের কর্মক্ষেত্রে বা ব্যক্তিগত কোনো ঝামেলা ছিল না। তাই তাঁর সঙ্গে আসলে কী হয়েছে, কিছুই ধারণা করতে পারছেন না তিনি।
এ বিষয়ে মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন বলেন, যে স্থানে মোটরসাইকেলটি পাওয়া গেছে সেখানে গভীর রাত পর্যন্ত মানুষের চলাচল থাকে। সেখানে ধস্তাধস্তি বা দুর্ঘটনার মতো কোনো ঘটনা কারও চোখে পড়েনি। প্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ নানাভাবে তদন্ত করছে। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে পুলিশ।