বিশেষ প্রতিবেদক (মহম্মদপুর)-
কৃষি কাজের উপর নির্ভরশীল মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার কয়েকশ কৃষক এ বছর বোরো ধান ও বীজ রোপণ করতে পারেননি। খাল দিয়ে পানি বের না হওয়ায় তারা বিভিন্ন দফতরে আবেদন করেও কোন সুরাহা পাননি।
উপায় না পেয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে প্রায় এক কিলোমিটার খাল খনন করেছেন গ্রামবাসী। শুক্রবার সকালে গ্রামের সর্বস্তরের শতাধিক মানুষ দলবেঁধে খাল খননের কাজ শুরু করে। খনন কাজ চলে বিকাল ৩ টা পর্যন্ত। আমাগীতে দফায় দফায় এ খাল খনন করা হবে বলে জানান শেখ আজগর আলী এবং নুর আলম শেখ নামের দুই যুবক।
উপজেলা সদরের রায়পাশা গ্রামের ঘোপ বাঁওড় এলাকার চিত্র এটি। খাল খনন করে ঘােপ বাওড়ের পানি পার্শ্ববর্তী মধুমতিতে বের করার লক্ষ্যে গ্রামবাসী এই উদ্যােগ গ্রহণ করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘোপ বাঁওড়ে প্রায় ৫০ হেক্টর চাষাবাদের জমি রয়েছে। সারা বছর প্রায় ২৫ হেক্টর জমি জলাবদ্ধ থাকে। ওই এলাকার পাঁচ গ্রামের কয়েক’শ কৃষক জমিতে বীজতলা ও বোরো ধানের চাষ করতে পারেন না। কৃষকের এ জনদূর্ভোগ দীর্ঘদিনের।
বর্ষার পানিতে ঘোপ বাঁওড়ের চারপাশের মাঠ পানির থৈথৈ করে। পানিতে ভরা বাঁওড়ের চারপাশ বন্ধ থাকায় পানি বের হতে না পারায় এ দূর্ভোগে পরে এলাকাবাসী। দীর্ঘদিন ওই বাঁওড়ে জলাবদ্ধতা থাকলেও নজরে আসেনি কারও। এবছরও উপজেলার কয়েক’শ কৃষক ধানের বীজ রোপণ করতে পারেনি। বাঁওড়ের পানি এখন ওই এলাকার কৃষকের কান্না। খাল দিয়ে বাঁওড়ের পানি নামেনি।
শুক্রবার দুপুরে সরেজমিন বাঁওড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, খালে পলি মাটি পড়ে ভরাট হয়ে গেছে। কয়েক’শ একর জমি এখনো পানির নিচে রয়েছে। বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা মিলে খালের যে জায়গা দিয়ে পানি যেতে পারছে না সেখানে মাটি কেটে সরিয়ে দিচ্ছেন। সরকারিভাবে বাঁওড়ের খাল খননের দাবি জানান এলাকাবসী।
রায়পাশা গ্রামের কৃষক হিব্রু মিয়া বলেন, ‘আমরা ইউএনও স্যারের কাছে আবেদন করছিলাম। ধরে নিয়েছিলাম ইউএনও স্যার খোঁজ খবর নেবেন। দেখে শুনে একটা ব্যবস্থা করবেন। ইউএনও স্যার আসেনি। উপায় না পেয়ে আমরা (গ্রামবসী) নিজেরাই খাল খননের কাজ শুরু করি।’
কৃষক আতিয়ার রহমান বলেন, ‘আমি কৃষি কাজ করি। আমার এই বাঁওড়ে তিন একর জমি আছে। এর আগে আমরা মন্ত্রী (সাবেক) মহোদয়ের কাছে আবেদন করি। তিনি আমাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন। দ্রুতই খাল খননেরর কাজ শুরু হবে। নির্বাচনের আগে জনপ্রতিনিধিরা লোক পাঠায়ে খাল মাপে নিয়ে যান। কিন্তু খাল খননেরর কাজ আর হয়নি।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রামানন্দ পাল বলেন, ‘আমি একটি আবেদন পেয়েছি। আমরা দ্রুতই পরিদর্শনে যাব। যদি খাল খনন করা প্রয়োজন হয় তবে আমরা খননের ব্যবস্থা করব।’