আশরাফ হোসেন পল্টু, বিশেষ প্রতিবেদক-

আফসানা খাতুন বানিয়াবহু-কাওড়া কাদেরিয়া আলিম সিনিয়র মাদ্রসার নবম শ্রেণির ছাত্রী। বাড়ি থেকে তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরে। পায়ে হেটে ভ্যানে চড়ে মাদ্রাসায় আসত সে। প্রতিনিয়তই স্কুলে আসতে দেরি হওয়ায় শিক্ষকদের কাছে তাকে প্রায়ই বকুনি খেতে হতো ।
সহপাঠীরা বাইসাইকেলে মাদ্রসায় আসলেও তার নিজের সাইকেল ছিলনা । দরিদ্র পরিবার হওয়ায় তার পিতার পক্ষে সাইকেল কিনে দেয়াও সম্ভব হয়নি।
আজ আফসানা বিনামূল্যে নতুন ঝকঝকে চকচকে একটি নতুন বাইসাইকেল পেয়েছে মহাখুশী।
শুধু আফসানা নয় আজ মঙ্গলবার (২৪ অগাস্ট) মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা সদরে রাজা সীতারাম রায়ের কাছারি বাড়ি প্রাঙ্গণে উপজেলার আটটি ইউনিয়নের বিভিন্ন স্কুলের ২০০ কিশোরী শিক্ষার্থীদের মাঝে মুজিব শতবর্ষে এলজিএসপি-৩ প্রকল্পের আওতায় মেধাবী ছাত্রীদের মাঝে বাইসাইকেল বিতরণ করা হয়।
মহম্মদপুর উপজেলা প্রশাসন সাইকেল বিতরণ অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে।
মেয়েরা বাইসাইকেল চালিয়ে স্কুলে গেলে তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ে। তাদের বিচরণক্ষেত্র অনেক বড় হয়। জানাবোঝার পরিধিও বৃদ্ধি পায়। এটাই নারীর ক্ষমতায়নের প্রথম ধাপ। এখন বাইসাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাওয়ার মধ্যে মেয়েদের লজ্জা বা ভয়ের কোন কারণ নেই।
বাইসাইকেল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাগুরা জেলা প্রশাসক ড. আশরাফুল আলম এসব কথাগুলি বলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মহম্মদপুর উপজেলার চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আবু আব্দুল্লাহেল কাফি। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও উপপরিচালক (স্থানীয়
সরকার) মো: কামরুজ্জামান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার রামানন্দ পাল ও শিকদার মিজানুর রহমান প্রমুখ।
বাইসাইকেল পেয়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী নুসরাত ও শামীমা খাতুন জানায়, স্কুল থেকে দুই কিলোমিটার দূরে অ্যাড়েন্দা গ্রামে তাদের বাড়ি। বাড়ি থেকে প্রতিদিন হেঁটে স্কুলে যাওয়া-আসা করতে হত । রাস্তায় ভ্যান চলাচল করলেও প্রতিদিন ভাড়া দেওয়া দিনমজুর বাবার পক্ষে সম্ভব হত না। যে কারণে বেশির ভাগ দিন পা হেঁটেই স্কুলে যাওয়া-আসা করতে হত। এতে প্রতিদিন অন্তত দুই ঘণ্টা সময় নষ্ট হত তার। এ বাইসাইকেল পেয়ে তার সেই কষ্ট আজ দূর হলো।
Like this:
Like Loading...