মাগুরানিউজ.কমঃ
কৃষি ব্যাংকের মাগুরা সদর উপজেলার আলমখালী বাজার শাখা থেকে ভুয়া তালিকায় শস্যগুদাম ঋণ কর্মসূচির আওতায় চার কোটি টাকা তুলে আত্মসাৎ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।এই ঘটনায় পাঁচ শতাধিক কৃষক বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত শাখা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন। ভূক্তভোগীদের অভিযোগ, তাদের নামে ভুয়া ঋণ তুলে টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
ব্যাংক ও স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে জানা গেছে, ১৯৯৫ সাল থেকে ওই শাখায় কৃষকদের জন্য শস্যগুদাম ঋণ কর্মসূচি চালু রয়েছে। কর্মসূচির আওতায় স্থানীয় কৃষকেরা ঋণ নিয়ে খাদ্যশস্য কিনে গুদামজাত করেন। গুদামটি কৃষি ব্যাংকের আওতায় একজন তত্ত্বাবধায়কের অধীনে থাকে। প্রতি অর্থবছরে ওই ঋণ দেওয়া হয়। পরে সংরক্ষিত খাদ্যশস্য বিক্রি করে কৃষকেরা ঋণ পরিশোধ করেন।
ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গত অর্থবছরে আলমখালী শাখা থেকে স্থানীয় ২৮৩ কৃষকের নামে কর্মসূচির আওতায় দুই কোটি আট লাখ টাকার ঋণ পাস করা হয়। ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক শ্যামল কুমার বিশ্বাস কৃষকদের মধ্যে ঋণের টাকা বিতরণ করেন।
এ ছাড়া ওই শাখায় চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ৫১৭ জন কৃষকের কাছে ঋণের মোট চার কোটি এক লাখ ৯২ হাজার টাকা অনাদায়ি হিসেবে দেখানো হয়।
আলমখালী বাজার, শ্রীপুরের সাচিলাপুর বাজার ও শালিখার আড়পাড়া বাজার শাখায় ‘শস্যগুদাম ঋণ কর্মসূচি’ চালু রয়েছে। প্রায় তিন মাস আগে সাচিলাপুর শাখায় ওই ঋণের প্রায় কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া আড়পাড়া শাখায় ওই ঋণের কার্যক্রম ভালো চলছে না।
এসব কারণে আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক আলমখালী শাখার ওই ঋণ কর্মসূচির অবস্থা জানতে ৭ সেপ্টেম্বর তাপস বিশ্বাসকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
কমিটি ঋণগ্রহীতাদের তালিকা ধরে মাঠপর্যায়ে কৃষকদের কাছে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, কৃষকেরা এসব ঋণ সম্পর্কে কিছুই জানেন না। ভুয়া তালিকা করে ঋণের ওই টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
শ্যামল কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘ঋণ দেওয়ার বিষয়টি আইওরা দেখে। আমি শুধু পাস করি।’ তাপস বিশ্বাস বলেন, প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক আছিয়া খানমও (অডিট) ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
কৃষি ব্যাংকের মাগুরার আঞ্চলিক সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মো. আলাউদ্দিন এ এ বিষয়ে বলেন, তদন্ত কমিটি আগামী সোম-মঙ্গলবার প্রতিবেদন দাখিল করবে।তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।