বিশেষ প্রতিবেদক (মহম্মদপুর)-
প্রায় দেড় বছর পরে স্কুল আঙিনায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আগমন ঘটবে আগামী ১২ সেপ্টেম্বর। স্কুল খোলার খবরে ক্লাস রুম ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করা হচ্ছে। কিন্তু সেই স্কুলের খেলার মাঠে বছরের ৮ মাস থাকে জলাবদ্ধতা। পানি জমে থাকায় মশা, সাপ ও জোঁকের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। যার কারণে চরমভাবে পাঠদান ব্যাহত হবে। ফলে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের পোহাতে হয় চরম দুর্ভোগ।
মহম্মদপুরে গড়ে ওঠা অর্ধশত বছরের পুরনো নহাটা ক্লাস্টারের বেজড়া নারানদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চিত্র এটা। ১৯৪০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এই বিদ্যালয়। বিদ্যালয়ের পাশে ঘনবসতি হওয়ায় পানি নিষ্কাশনের পথ না পাওয়ায় জলাবদ্ধতা স্থায়ী রুপ নিয়েছে। সরেজমিন দেখা গেছে, স্কুলের মাঠ নিচু হওয়ার কারণে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন হয় না। পুরো মাঠটি জলমগ্ন হয়ে আছে। অল্প কিছু অংশে পানি না থাকলেও তা কর্দমাক্ত ও স্যাঁতসেঁতে। বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশে পাঁকা রাস্তা এবং অন্য তিন পাশে ঘন বসতি। আগের ইউএনও মিজানুর রহমান এবং বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বসত বাড়ির পাশ দিয়ে জলাবদ্ধতা নিরসনের কালভাট বসালেও স্থানীয়দের বাঁধার মুখে পড়ে তা সফল হয়নি।
স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র জিসান আহম্মেদ জানায়, প্রায় দেড় বছর পরে স্কুলে যাবো। কিন্তু স্কুলে আসতে গেলে নোংরা পানির ভেতর দিয়ে আসতে হয়। পানিতে জোঁক, সাপ ব্যাঙের বাচ্চা থাকে। এতে আমাদের ভয় লাগে। সে জন্য স্কুলে আসতে মন চায় না। স্কুলের একজন অভিভাবক মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, প্রায় সারাবছর স্কুলের মাঠে পানি জমে থাকে। স্থায়ী জলাবদ্ধতার কারনে পানি পচে নষ্ট হচ্ছে। মশা, মাছি, জোঁক ও সাপের উপদ্রব বাড়ছে। ফলে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগব্যাধির সৃষ্টি হচ্ছে। এ অবস্থায় ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। দ্রুত পানি নিস্কাশনের পথ তৈরী করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক নাহিদ পারভীন বলেন, স্কুলে ৩৩৯ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। স্কুলের রেজাল্টও যথেষ্ট ভালো। এ স্কুলের জলাবদ্ধতার জন্য পাঠদানসহ সহশিক্ষা কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। স্কুল কমিটি ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে জানিয়ে কোন কাজ হয়নি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রামানন্দ পাল বলেন, সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরেছি। শুনেছি স্থানীয় কয়েক প্রভাবশালীর কারণে জলাবদ্ধতার বিষয়টির সমাধান হচ্ছে না। সরেজমিন গিয়ে খোঁজ নিয়ে দ্রুত জলাবদ্ধতা সমাধানের চেষ্টা করব।