মাগুরানিউজ.কমঃ
বুনো শাকে জীবিকার দিন ফুরিয়ে আসছে। গাছপালা ধ্বংস হচ্ছে, বন-জঙ্গল হারিয়ে যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বদলে যাচ্ছে ছায়াঘেরা সবুজ প্রকৃতি। বসতির প্রয়োজনে কেটে ফেলা হচ্ছে ঝোপঝাড়। পরিবেশ বিপর্যয়ের এই ধারাবাহিকতায় হারিয়ে যাচ্ছে বুনো শাক। আর এর প্রভাব পড়ছে বহু মানুষের জীবিকায়। বুনো শাকে জীবিকা নির্বাহকারীদের অনেকেই ফিরছেন অন্য পেশায়। কেউ কেউ টিকে আছে অতিকষ্টে।
পঁয়তাল্লিশ বছর বয়সী রুশিয়া বেগম প্রায় ২০ বছর আগে থেকে বুনো শাক কুড়িয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। স্বামী আবুল হোসেন ছেড়ে চলে যাওয়ায় তাকে এই পথে নামতে হয়। শাক কুড়িয়ে ঘরে ঘরে বিক্রি করে চাল-ডাল কিনে বাড়ি ফিরতেন। বেশ ভালোই কাটছিল তার দিন। কিন্তু সেদিন ক্রমেই ফুরিয়ে আসছে।
এক নিঃশ্বাসে অনেক শাকের নাম বলে ফেললেন রুশিয়া। ঢেঁকি শাক, থানকুনি পাতা, কচুর লতি, কুমারী লতা, তিত বেগুন, কলমি শাক, হেলেঞ্চা শাক, ভাউত্তা শাক, চটা শাক, আগ্রা শাক, মুরমুইররা শাক, গোল হেলেঞ্চা শাক, অউদ্দা শাকসহ আরও কত শাকের নাম। আবার এসব শাকের গুণাগুণ সম্পর্কেও রুশিয়া সচেতন। বললেন, কুমারী লতার আগা সাপে খায়। মানুষের এই আগা খেলে সাপের বিষ নেমে যায়।
একসময় মাগুরার গ্রাম এলাকায় প্রচুর পরিমাণ এসব বুনো শাক পাওয়া যেত। এই কাজে অনেকেই জীবিকা নির্বাহ করতেন। গ্রামের লোকজনের কাছে বুনো শাকের কদর অনেক বেশি। কিন্তু এখন শাক কুড়িয়ে জীবিকা নির্বাহকারী মানুষের সংখ্যাও কমে গেছে। ফুরিয়ে গেছে শাকের উৎসস্থলও।
রুশিয়া বললেন, এখন অনেক শাক আর দেখা যায় না। কুমারী লতা, তিত বেগুন, অউদ্দা শাক, মুরমুইররা শাক অনেকটাই কমে গেছে। আগে বন-জঙ্গল ছিল। এখন অনেকটাই কমে গেছে। অনেক ঘুরে কিছু শাক পাওয়া গেলেও তার দাম ঠিকমত পাওয়া যায় না।