মনিরুল ইসলাম, বিশেষ প্রতিবেদক-
শালিখা উপজেলার সীমাখালী বাজার থেকে তিন কিলোমিটার এগিয়ে গেলেই দেখা মিলবে ছান্দড়া গ্রামের জমিদার বাড়ির। এখনো টিকে আছে কালের সাক্ষী হয়ে বাড়িটির ধ্বংসাবশেষ। মুঘল আমলের প্রথমার্ধে বাড়িটি তৈরি করেন জমিদার অলঙ্গন মোহন দেব রায়।
এই অঞ্চলের মধ্যে ছান্দড়ার জমিদার অত্যন্ত প্রতাপশালী ছিলেন। এ বাড়ি থেকে এলাকার কর খাজনা আদায় ও শাসনকাজ পরিচালনা করা হতো। এ সবই আজ ইতিহাস। কালের পরিক্রমায় সবকিছু হয়ে গেছে অতীত। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ভেঙ্গে পড়ছে জমিদার বাড়ি, ইট খসে পড়ছে। জানালা দরজা হয়ে গেছে উধাও। জমিদারের জমিদারী না থাকলেও টিকে আছে বাড়ির ধ্বংসাবশেষ।
এ ছাড়াও টিকে আছে জমিদার বাড়ির শান বাঁধানো পুকুর ঘাট, কালি মন্দির ও শতবর্ষী আম গাছ। জমিদারের ব্যবহৃত হাতিশালা ও পুকুর ভরা ঘ্যঙ্গর ব্যাঙ কোনো কিছুই নেই।
এছাড়াও এই জমিদারের বাড়ির পাশে ভারতের সাবেক ক্রিকেটার সৌরভ গাঙ্গুলির পুর্বপুরুষের বাড়ি ছিল বলে জানা যায়। জমিদার বাড়ির পাশে ছিল গাঙ্গুলিদের বাড়ি। তবে এ নিয়ে রয়েছে অনেক বিতর্ক। অস্তিত্বের কিছু না থাকলেও কালের সাক্ষী হয়ে আছে এই জমিদার বাড়ি ও পাশের সেই বেগবতী নদী।
ছান্দড়া গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি স্বপন মুখার্জির সাথে কথা বললে তিনি জানান, অলঙ্গন মোহন দেব রায় অত্যন্ত প্রভাবশালী জমিদার ছিলেন। এই বাড়ি থেকে এলাকার কর খাজনা আদায় ও শাসনকার্য পরিচালনা করা হতো। কালের সাক্ষী হয়ে এখন শুধু টিকে আছে বাড়ির ধ্বংসাবশেষ। জমিদার বাড়ির পাশেই গাঙ্গুলিয়াদের বাড়ি ছিল। পরবর্তী সময়ে তারা কলকাতায় চলে যায়।
হোক ধ্বংসাবশেষ তবুও প্রতিদিন ভ্রম পিপাসুরা জমিদার বাড়িটি দেখতে আসেন। বাড়িটির অস্তিত্ব রক্ষা করতে পারলে এটি এলাকার পর্যটন কেন্দ্র হতে পারে বলে মত প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। উপযুক্ত সংরক্ষণের উদ্যোগ না নেয়া হলে ঐতিহাসিক নিদর্শনটি বিলুপ্ত হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন তারা।
বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আনা হলে সিমাখালি বাজারে একটি দিকনির্দেশক পিলার বসানো হয়। যে পিলারটি জমিদার বাড়ির অবস্থান প্রদর্শণ করে। তবে স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য এখানে ভৌতিক অবকাঠামোগত কোন কার্যক্রম দৃশ্যমান হয়নি।