শহীদ ফরহাদের লাশ উঠাতে হলে, আমার লাশের উপর দিয়ে উঠাতে হবে-শহীদ ফরহাদ হোসেনের মা

মহসিন মোল্যা, বিশেষ প্রতিবেদক-
আমার সন্তান তো অনেক আগেই মারা গেছে। তাকে আবার নতুন করে কেন আবার কবর দিতে হবে? আমার সন্তান শহীদ ফরহাদের লাশ কবর থেকে তুলতে হলে, আমার লাশের উপর দিয়ে তাঁর লাশ তুলতে হবে কথাগুলো কান্না বিজরিত কণ্ঠে বলছিলেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শহীদ ফরহাদ হোসেনের মা। তিনি আরো বলেন, আমার সন্তানের লাশ নিয়ে একটি স্বার্থন্বেষী মহল ব্যবসা করছেন। আমরা সন্তান মারা গেছে৷ অথচ মামলার বাদী যে হয়েছেন আমরা তাকে চিনি ও না। আমাদের কোন কিছুর প্রয়োজন নাই। আমার সন্তানের লাশ কবর থেকে তুলতে দেব না। আর যদি তুলতে হয় আমার লাশের উপর দিয়ে তুলতে হবে।
মাগুরা বিজ্ঞ আদালত মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার রায়নগর গ্রামের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ ফরহাদ হোসেনের লাশ কবর থেকে  উত্তোলনের আদেশ দেন। সোমবার সকালে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মুজাহিদুল ইসলাম কবর থেকে লাশ উত্তোলনের জন্য যান৷ এ সময় শ্রীপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইদ্রিস আলী ও সেনাবাহিনী, ডিবি ও পুলিশ সঙ্গে ছিলেন৷ সকাল থেকে লাশ উত্তোলনের চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত পরিবার, আত্নীয়-স্বজন, গ্রামবাসী ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বাঁধার মুখে লাশ উত্তোলনে না করেই ফিরে যেতে হয়।
শহীদ ফরহাদ হোসেনের বড় ভাই গোলাম কিবরিয়া বলেন, ফরহাদ হোসেন মাগুরা ঢাকা রোডে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ শহীদ হয়। পরে আমরা তাৎক্ষণিক তাঁর লাশ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তাররা পোস্টমর্টেম করতে অস্বীকার করেন। পরে আমরা তাঁর লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে এসে ধর্মীয় বিধিমোতাবেক দাফন করি। আমাদের পরিবার থেকে কেস করেনি। কিন্তু কেস হয়েছে তাদের রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য। এ বিষয়টি আমরা জানি ও না। আমরা তাদের চিনি ও না। যেহেতু কেস হয়েছে, আদালতের আদেশ হয়েছে। আমরা প্রসেডিওর মেনে চেষ্টা করেছি কিন্তু আমাদের কথা শোনা হয় নাই। আজ লাশ তুলতে আসছে আমরা এবং এলাকাবাসী জানিয়ে দিয়েছি, আমরা লাশ তুলতে ইচ্ছুক না।
এ সময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা আন্দোলনে পর থেকে এখন পর্যন্ত দেখছি মাগুরাতে ছাত্র আন্দোলনে শহীদ হয়েছে তাদেরকে নিয়ে স্বার্থান্বেষী বিভিন্ন দল যে দলগুলো আছে বিভিন্ন দল তাদের নিজস্ব স্বার্থ হাসিলের জন্য মামলা দিচ্ছে। একটা শহীদ কে নিয়ে ১’শ, ২’শ এমনকি ৫’শ জনের নামে মামলা হয়েছে। শহীদ ফরহাদের পরিবারের লোকজন জানে না যে এ মামলার বাদী কে? আমরা জানতে পেরেছি তার মামলার ২ শতাধিক আসামি ছিল। কিন্তু দিন দিন আসামি কমে যাচ্ছে। এ পবিবার এ মামলার বাদী না তাহলে কেন এ পরিবার লাশ উঠাতে দেবে? আগে এ মামলা কে করেছে? বা কারা করেছে? কোন উদ্দেশ্যে করেছে এ বিষয়ে ফয়সালা হবে। তারপরে লাশ উঠাবে কি না সিদ্ধান্ত হবে৷
উল্লেখ্য, শহীদ ফরহাদ হোসেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ৪ আগস্ট মাগুরা শহরের ঢাকা রোড এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
January ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Dec    
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  

ফেসবুকে আমরা

বিভাগ

দিনপঞ্জিকা

January ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Dec    
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
%d bloggers like this: