মাগুরানিউজ.কমঃ
লাউ চাষ করে লাভবান হচ্ছেন মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার বারইপাড়ার কৃষকরা। গ্রামটির প্রায় দেড় হাজার পরিবারের অধিকাংশের জমিতেই ছোট-বড় মিলিয়ে সারা বছর চাষযোগ্য বারোমাসি লাউ চাষ করেছেন। কেউ কেউ আবার লাউয়ের সাথে সাথী ফসল, পালং শাক, মুলাসহ বিভিন্ন সবজির চাষও করেছেন। তবে লাউকেই তারা প্রধান অর্থকারি ফসল হিসেবে বেছে নিয়েছেন। এ কারণে স্থানীয়দের কাছে বারইপাড়া এখন লাউ গ্রাম হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।
এ গ্রাম থেকে চলতি বছর প্রায় ৬০ লাখ টাকার লাউ বিক্রি হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বারইপাড়া গ্রামে এ বছর ৮৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৬০ হেক্টর জমিতে লাউ চাষ হয়েছে। বাকি ২৫ হেক্টর জমি চাষ হয়েছে অন্যান্য সবজির। লাউ এখন সারা বছর চাষ করা যায়। ওই গ্রামের অধিকাংশ কৃষকরা বারোমাসি জাতের লাউ চাষ করছেন। কৃষকরা এ বছরের লাউয়ের বীজ লাগানোর পর থেকে এ চাষ সফল করার জন্য কৃষি বিভাগ কৃষকদের বিভিন্ন কারিগরি সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। লাউয়ের রোগ বিশেষত পামকিন বিটেন, এপি লেকনা বিটেন, ছত্রাক, পাতা ঝলসানো, পাতা পোড়া রোগসহ বিভিন্ন রোগবালাই প্রতিরোধে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া ৩০ থেকে ৫০ জন কৃষক নিয়ে লাউয়ের পাশাপাশি অন্যান্য সবজি চাষ বিষয়ে গ্র“প সভা করা হচ্ছে। বর্তমানে কৃষকরা তাদের ক্ষেত থেকে লাউ তুলে বাজারে বিক্রি করতে শুরু করেছে।
দেখা গেছে, বারইপাড়া গ্রামের মাঠে মাঠে শোভা পাচ্ছে সবুজে ঘেরা লাউ গাছ। কৃষকরা জমিতে লাউয়ের মাঁচা মেরামত, রোগবালাই প্রতিরোধসহ গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করাসহ তা তুলে বাজারে বিক্রয়ের জন্য পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
চাষিরা জানান, স্বল্প খরচে লাউ চাষ করছেন তারা। লাউয়ের বীজ বপনের পর মাঁচা তৈরিতে উপকরণ হিসেবে বাঁশ, সুতা ব্যবহার করেছেন। মাঝে মধ্যে অল্প পরিমাণে সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করছেন। বর্তমানে লাউয়ের ভালো দাম পাচ্ছেন তারা। এক বিঘা একটি ক্ষেত থেকে প্রতিদিন গড়ে ৩০ থেকে ৪০টি লাউ তোলা হচ্ছে। জেলার ঢাকা রোডের পাইকারি বাজারে এসব লাউ বিক্রয়ের জন্য পাঠানো হয়। পাইকারদের কাছে প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩৫ টাকায়। এই বাজার থেকে থেকে লাউ কিনে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করছে পাইকারা।
বারইাড়া গ্রামের কৃষক রেজাউল ইসলাম, আব্দুল হাই, ভিকু মোল্যা, তাহারুল শেখসহ অনেকে জানান, তারা প্রত্যেকে এক বিঘা করে জমিতে লাউ চাষ করেছেন। এখান থেকে ৩০ থেকে ৪০টি লাউ বিক্রি করে তাদের প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার ৫০০ টাকা আয় হচ্ছে। সব খরচ বাদ দিয়ে তারা অনেক টাকা লাভ করে। তারা ভালোভাবে সংসারের ব্যয় নির্বাহ করতে পারছে। লাউ চাষে কৃষি বিভাগ তাদের সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করছেন।