মাগুরানিউজ.কমঃ
শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে না এলে সাকিব আল হাসানের কেন যেন ভালো লাগে না। ঢাকায় থাকলে সময় করে তিনি স্টেডিয়ামে আসেন। ক্রিকেট খেলার মতো মাঠও তার প্রিয়। মাঠের টানে গতকালও এসেছিলেন হোম অব ক্রিকেট শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে। ইনডোরের সামনে গাড়ি রেখে ভেতরে মুমিনুল হকের সঙ্গে গল্প করছিলেন। গেটের সামনে মানুষের ভিড় জমে যায় কিছুক্ষণের মধ্যেই।
কালো পিঁপড়ে যেমন মিষ্টির গন্ধে চলে আসে, সাকিবভক্তরাও তেমনই কোনো টানে ছুটে আসেন। তারকাদের খ্যাতির বিশেষ কোনো সুবাস আছে কিনা, জানা নেই। তবে ভক্তদের বিশেষভাবে কাছে টানতে পারেন তারা। জাতীয় দলের বাঁ-হাতি এ স্পিনার যেখানেই যান না কেন, তার আশপাশে ভক্তের ভিড় লেগে থাকে। সাকিব দেশের ক্রিকেটের মহাতারকা। সব মিলে তিনি দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব। ক্রিকেট খেলুড়ে দেশে সাকিবের পরিচিতি রয়েছে। ভারত, পাকিস্তান, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ায় ক্রিকেট ভক্তদের কাছে সাকিবের পরিচিতি থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু ক্রিকেট খেলে না এমন দেশের মানুষের কাছে সাকিবের পরিচিতি দেখে বিস্ময়ের জন্ম দেয়। ইনচন এশিয়ান গেমসে খেলতে গিয়ে সাকিব দেখেছেন তার জনপ্রিয়তা কত দূর পৌঁছে গেছে।
বাংলাদেশের মতো দক্ষিণ কোরিয়ায় ক্রিকেট জনপ্রিয় নয়। এশিয়ান গেমসের জন্যই তারা খেলাটিতে ঢুকেছে। দেশটির সাধারণ মানুষ ক্রিকেট ভালো করে বোঝে না। ক্রিকেট নামের সঙ্গে তারা পরিচিত। বেস বলের সঙ্গে তুলনা করে তারা ক্রিকেট চেনে। বাংলাদেশকেও তারা চেনে ক্রিকেট দিয়ে। ইনচন এশিয়ান গেমসে যত জন বাংলাদেশের নাম করেছে, তার সঙ্গে ছিল ক্রিকেট। বাংলাদেশের মানুষ সম্পর্কে তাদের ধারণা না থাকলেও সাকিবকে তারা চেনে এবং জানে। ইনচন এশিয়ান গেমসের আগে সাকিবের খেলা তারা দেখেনি। গুগলে সার্চ দিয়ে তার সম্পর্কে জেনেছে। আইসিসি খেলোয়াড় র্যাঙ্কিং তার পরিচিতি বাড়াতে সাহায্য করেছে। ইয়ানহি ক্রিকেট স্টেডিয়ামের কে না জানত সাকিব বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার।
গেমস ভিলেজ খেলোয়াড়দের আবাস। হাজার হাজার খেলোয়াড় একসঙ্গে থাকেন। দলের সঙ্গে সাকিবরাও ছিলেন গেমস ভিলেজে। একটা বিশাল ডাইনিংয়ে খেলোয়াড়দের খাওয়ার ব্যবস্থা। সেখানে দেশ-বিদেশের তারকা-মহাতারকাদের দেখা হয়। সাকিবের সঙ্গে সেখানে অনেক তারকা খেলোয়াড় দেখা করে ছবি তুলেছেন। বাংলাদেশের সাকিব গেমসে ছিলেন তারকাদের তারকা। তার সঙ্গে ছবি তোলার জন্য লাইন দিয়েছেন অনেকে। ভারত, পাকিস্তান বাদ দিলেও মধ্যপ্রাচ্যের খেলোয়াড়দের কাছেও পৌঁছে গেছেন সাকিব। বাংলাদেশের এ ক্রিকেটারের অটোগ্রাফ নিতে দেখা গেছে মধ্যপ্রাচ্যের খেলোয়াড়দের।
সাকিব তার এ জনপ্রিয়তা দারুণ উপভোগ করেছেন। গতকাল এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি হেসে বললেন, ‘অনেক তারকা খেলোয়াড় ছিলেন গেমসে। আমিও তাদের দেখেছি।’ সাকিব লাজুক স্বভাবের। দর্শকদের ভালোবাসায় সিক্ত হলেও বেশি কিছু বলতে পারেন না তিনি। এশিয়ান গেমসে নিজের জনপ্রিয়তা স্বচক্ষে দেখেও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেননি।
তবে তার জনপ্রিয়তা দেখে মুগ্ধ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস, ‘সাকিব সত্যিকারের স্টার (তারকা)। গেমসে কত দেশের খেলোয়াড় দেখেছি তার সঙ্গে ছবি তুলছে। আমার তো মনে হয়েছে ওকে সবাই চেনে।’ ইনচন এশিয়ান গেমসে খেলে সাকিবের পরিচিতি আরও বেড়ে গেছে। ইনচনের বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অনেক ছেলেমেয়ে তার ছবি তুলে রেখেছে। অনেকে তার ছবির পাশে লিখে রেখেছে, ‘ক্রিকেট ওয়ার্ল্ড স্টার’।