মাগুরানিউজ.কমঃ
সারা বিশ্বের এখন ভয়ংকার পেশার নাম শিশু শ্রম। দিনে দিনে এই শ্রমের শ্রমিকের সংখ্যা বাড়ছে, তারা আসহায় হচ্ছে কিন্তু প্রতিকারে কিছুই হচ্ছে না। বিশ্বের বিভিন্ন এনজিও সংস্থা, সরকারসহ বিভিন্ন সংস্থা এর বিরুদ্ধে আলাপ, আলোচনা, পরিসংখ্যান তুলে ধরলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। প্রতিদিনই জীবন ধারণ আর দু’বেলা আর দু’মুঠো অন্নের জন্য তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতেই দ্বিধাবোধ করছে না। মূলত তাদের নিজেদের খাওয়া আর পরিবারের খাওয়ার জন্য শিশুরা লেখাপড়ার পরিবর্তে পেশার কঠিন আবর্তে জন্মের পরেই চলে যাচ্ছে। অথচ আমাদের দেশের একটি শ্রেণী তাদের ব্যবহার করে সুবিধা ভোগ করছে।
আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যত। সবার বাঁচার অধিকার আছে কিন্তুসমাজে একটু ভিন্ন ভাবে বেঁচে থাকে দরিদ্র পরিবারের শিশুরা। এদের সোনালী ভবিষ্যত অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছে। যে বয়সে তাদের খাতা কলম নিয়ে স্কুলে যাবার কথা ছিলো, ঠিক সেই বয়সে শুধুমাত্র দারিদ্র্যের কারণে আজ ওরা শিশু শ্রমিক।মাগুরা জেলার শ্রীপুর, মাগুরা সদর, মোহাম্মেদপুর ও শালিখা উপজেলায় দিন দিন শিশু শ্রমিকের সংখ্যা অসংখ্যজনক হারে বাড়ছে। আইন থাকেলেও প্রয়োগ নেই এখানে।
তাদের কথা ভাবে না কেউ। যাদের কন্ঠে আজ শোনার কথা “আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি” কিন্তু তারা আজ নির্মান শ্রমিক আবার কেউ হেলপার। অল্প বয়সেই স্কুলের পরিবর্তে তার শ্রমিক কার্যালয়ে গিয়ে ভীড় জমায় কাজের জন্য। বই খাতার পরিবর্তে হাতে চায়ের কাপ নতুবা লোহার হাতুড়ী আজ তাদের হাতে। ফলে প্রাপ্ত বয়স্ক হতে না হতেই ঝরে যাচ্ছে অনেক শিশু।
সরেজমিনে দেখা যায়, মাগুরা জেলাসদর সহ শ্রীপুর, মোহাম্মেদপুর ও শালিখাউপজেলায় দরিদ্র এলাকায় যেসব শিশু শ্রমিক রয়েছে তাদের বয়স সর্বোচ্চ ১০-১৩ বছর। যে সময়টা তাদের স্কুলে থাকার কথা ছিলও। ঘুরে বেড়ানোর কথা আর হৈহুল্লা করে বেড়ানোর কথা, আর ঠিক সে সময় তার শ্রম বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছে।
জানা গেছে, এরা সবাই গরীব, এরা দিন খাটে দিন খায়। এমন অভাবি ঘরের সন্তান। যাদের স্কুলে যাবার ইচ্ছে আছে, কিন্তুনেই কোন পরিবেশ। কারণ তাদের পিতা- মাতার আর্থিক অভাব। দেখা গেছে, এরা সারাদিন কঠোর পরিশ্রম করে সামান্য মজুরি পাই যা দিয়ে তাদের দুবেলা দুমুঠো অন্য জটেনা। নামে শিশু হলেও তাদের দিয়ে কাজ করানো হয় বড় বড় হোটেল রেস-রা, ওয়েলডিং, কেই বা সাইকেল ও মোটর সাইকেল মেরামতে কাজ, বাসের হেলপার কেউ ভ্যান চালায় জেলার বিভিন্ন সড়কে। তবে এসব শিশুরা সঙ্গে কথা বললে তারা জানায় আমরা গরীব, কাম না করলি খাতি দিবি কিডা? তবে আমরা পাখির ডাক শুনে দোকানে আসি আর সন্ধ্যা বেলায় যায়। তার পরেও আমাদের বেতন দেওয়া হয় কম।
প্রতিদিন আমাদের ৩০-৫০ টাকা আর একবেলা খাবার দেওয়া হয়। যা দিয়ে আমাদের বাকি বেলায় খাবার জোটে না। এই টাকা দিয়ে নিজে চলে কেউ বা আবার সংসার চালানো কাজে সাহায্যে করে। এরা মাত্র ৩০-৫০ টাকা মজুরী পায়। অথচ, এ বয়সে তাদের বই খাতা নিয়ে স্কুলে যাবার কথা। কিন্তু তারা আজ শ্রমিকের কাজের জন্য ধর্ন্য দেয়।
সরকার দেশে ঝরে পড়া শিশুদের স্কুলগামী পদক্ষেপ নিয়ে বাংলাদেশে বিভিন্ন এনজিওদের কাজ করার সুযোগ করে দিলেও বাস-বে তার কোন পরিবর্তন হয়নি। মালিকরা শিশু শ্রমিক দিয়ে কাজ করায় কারণ অল্প টাকার বেশি কাজ করাতে পারে বলে। বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী ১৫ বছরের নিচে সবাই শিশু। আমাদের মনে রাখতে হবে। আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ।