বিশেষ প্রতিবেদক (মহম্মদপুর)-
মহম্মদপুরে তিন মাস না যেতেই মধুমতি নদীতে আবার ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। উপজেলার হরেকৃষ্ণপুর গ্রামের প্রায় ১৫ টি বসত বাড়ি গত সাত দিনে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙ্গনের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে ওই গ্রামের প্রায় পঁচিশটি বাড়িসহ বেশ কিছু স্থাপনা। সরেজমিন রোববার সকালে গিয়ে দেখা গেছে, হরেকৃষ্ণপুর গ্রামের রবিউল ইসলাম, মোঃ ফরিদ আহম্মদ, মোঃ আক্কাচ আলী, হাফেজ মোঃ আহম্মদ আলী, মোঃ নুর-আলী, মোঃ শাহাদত, মোঃ শহিদুলসহ অনেকে তার শেষ সম্বল বসত ঘর ভেঙ্গে সরিয়ে নিচ্ছেন। বাড়ির গাছপালা কেটে সরিয়ে নিচ্ছেন তারা। নদী ভাঙন অব্যাহত থাকায় নদীর তীরবর্তী এলাকায় বসবাসকারীদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
পানি কমতে থাকায় নদীভাঙন ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। ভাঙন ভয়ংকর আকার ধারণ করায় নদীতীরে বসবাসকারী মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে ভাঙনের মুখে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন শাহাদত মোল্যা, ইবাদত মোল্যা, রমজান মিয়া, নান্নু, মৃদুল শেখ, মন্নু শেষ, পান্নু ও সলেমান শেখ। এ ছাড়া উপজেলার নদীতীরবর্তী চরপাচুড়িয়া, মহেষপুর, কাশিপুর, ভোলানাথপুর, আড়মাঝি, হরেকৃষ্ণপুর ও রুইজানি এলাকার ভাঙনকবলিত অধিবাসীদের এখন দিন কাটছে আতঙ্কে। এসব গ্রামের মসজিদ, মন্দির, ঈদগাহসহ হাজার হাজার একর ফসলি জমি ও বসতবাড়ি এ বছর বেশি ভাঙনের কবলে পড়েছে। গত দুই বছরে বর্ষা মৌসুমে মধুমতীর ভাঙনে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে ৪৫টি পরিবারের শতাধিক ঘরবাড়ি। এ বছর ভাঙনের মুখে রয়েছে অসংখ্য দোকানপাটসহ হাজার হাজার একর ফসলি জমি। হরেকৃষ্ণপুর এলাকায় নদী ভাঙনে মাফুজার ও মিটুর মিয়ার বাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। সহায়-সম্বল হারিয়ে মিটুর মিয়া অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
অন্যদিকে মাফুজার মিয়া রাস্তার পাশে ছাপড়াঘর তুলে মানবেতর জীবনযাপন করছেন হরেকৃষ্ণপুর গ্রামের নিটুর মিয়া, মাফুজার ও রমজান শেখ বলেন, ‘আমাদের এখন কোন জমিজমা নেই। নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। মোট সাত বার বসত ঘর সরিয়ে শেষ রক্ষা হয়নি। এবার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে মধুমতি ভাঙ্গন বৃদ্ধি পায়। এই ভাঙনে আমাদের বসতবাড়ি নদীতে নিয়ে গেছে।’ এ ব্যাপারে মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রামানন্দ পাল বলেন, ‘ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে যাদা সহায়তা দেওয়ার ব্যাপারে তালিকা প্রণয়ন করা হচ্ছে।’
মাগুরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান মাগুরা নিউজ কে বলেন, ফের ভাঙ্গনের খবর পেয়েছি। সরেজমিনে লোক পাঠানো হয়েছে। যেহেতু বাজেট নেই। পারমিশনের জন্য উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। পরমিশন পেলে কাজ শুরু করবো।