মহসিন মোল্যা, বিশেষ প্রতিবেদক-
শ্রীপুরে গড়াই নদী, কুমার নদ ও বিভিন্ন খাল-বিলে অবৈধ চায়না দোয়াড় ও কারেন্ট জাল ব্যবহার করে অবাধে মাছ শিকার করছে মৎসজীবি ও বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ। এভাবে অবাধে মাছ শিকার করলে হুমকির মুখে পড়বে মৎস্য খাত। অবৈধ এ সকল চায়না জালে অবাধে মাছ শিকারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসন নিরব। সচেতন মহলের দাবি, অবৈধ চায়না দোয়াড় ও কারেন্ট জাল ব্যবহার অনতিবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। তা না হলে এমন একটা সময় আসবে দেশীয় প্রজাতির সকল মাছই ধ্বংস হয়ে যাবে।
সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার লাঙ্গলবাঁধ থেকে শুরু করে মাঝাইল গড়াই নদীর প্রায় ৩০ কিলোমিটার, শ্রীপুর, গোয়ালপাড়া, টুপিপাড়া, বারইপাড়া, শ্রীকোল, জোকা, গয়েশপুর, কাজলিসহ প্রায় ১০ কিলোমিটার সম্পূর্ন কুমার নদের দু-পাড় মৎসজীবি এবং বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ নিষিদ্ধ চায়না দোয়াড় ও কারেন্ট জাল ব্যবহারের মাছ শিকার করছে। এছাড়া উপজেলার বড়বিলা, গজারিয়া বিল, ডাইয়ের বিল, টিকারবিলাসহ বিভিন্ন ছোট বড় বিলে অবাধে চায়না ও কারেন্ট জালে ধরা পড়েছে দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির ছোট-বড় মাছ। শুধু মাছই নই, জলে থাকা কোন জলজ প্রাণী ও রক্ষা পাচ্ছে না এ জাল থেকে। এমনকি মাছের ডিম ও ছেকে তোলা হচ্ছে। এতে করে বিলুপ্তির মুখে প্রাকৃতিক সব ধরণের মাছ। দেশীয় মাছ রক্ষার্থে প্রশাসনকে কঠোর হওয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন এলাকার সাধারণ মানুষ। অবাধে মাছ শিকারের ফলে চিংড়ি, পুটি, রুই, কাতলা, টেংরা, কই, শিং, মাগুর, বেলে, বোয়াল, শোল, টাকি, পাপদা থেকে শুরু করে ছোট-বড় কোন মাছই রেহায় পাচ্ছে না৷ যার ফলে উপজেলার নদ-নদী, খাল-বিল ক্রমেই মাছ শুণ্য হয়ে পড়ছে।
এ বিষয়ে গোয়ালপাড়া গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, চায়না দোয়াড় ও কারেন্ট জাল অবৈধ। অবাধে এরা এগুলো দিয়ে মাছ শিকার করে। এভাবে মাছ শিকার করলে পরবর্তীতে আমরা মাছ পাবো না।
একই গ্রামের বাসিন্দা আলী হাসান নামে অপরজন বলেন, যারা জেলে না তারাও মাছ ধরে। চায়নাদের সাপ মারা জালে এমন কোন মাছ নাই যে বাঁধে না। এদের এহনই বন্ধ করতে হবে।
উপজেলা মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক শ্রীবাস বলেন, আমরা যারা প্রকৃত মৎস্যজীবি আমরা অবৈধ চায়না দোয়াড় ও কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরার বিপক্ষে। এভাবে চলতে থাকলে তো আমরা আর মাছ পাবো না। এ অবৈধ জাল দ্রুত বন্ধের জোর দাবি জানাচ্ছি।
মৎস্যজীবি ও মাছের আড়ৎদার বাবলু বিশ্বাস বলেন, এখনই অবৈধ চায়না জাল দিয়ে মাছ ধরা বন্ধ করতে হবে। আর তাহা না হলে ১ থেকে ২ বছর পর কোথাও কোন মাছ পাওয়া যাবে না।

চায়না দোয়াড় ও কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরা মৎস্যজীবি খামারপাড়া গ্রামের শৈলেন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, আমি জানি এ জাল অবৈধ। আমরা পেটের দায়ে মাছ ধরি। সবাই এ জাল দিয়ে মাছ ধরা বন্ধ করলে আমি ও বন্ধ করে দিবো।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মীর লিয়াকত আলী জানান, অবৈধ জাল ব্যবহারের মাধ্যমে মাছ শিকারের অভিযোগ পেয়েছি। অবৈধভাবে মাছ শিকার বন্ধে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা জরুরি। উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিষয়টা অবহিত করবো। আসলে জেলে সম্প্রদায় ও অবৈধভাবে এ চায়না দোয়াড় ও কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ শিকার করার বিপক্ষে।
Like this:
Like Loading...