ন্যাশনালডেস্ক,মাগুরানিউজ.কম:

বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদের ৯০ তম জন্মদিন বুধবার। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার পাশাপাশি প্রথম সরকার গঠনেও নেতৃত্ব দেন ক্ষুরধার মস্তিষ্কের এই রাজনীতিক।
বিশাল হৃদয়ের বঙ্গবন্ধু আর অসাধারণ রাজনৈতিক প্রজ্ঞার অধিকারী তাজউদ্দিনের সমন্বয়ে গড়ে উঠে দুর্দান্ত এক রাজনৈতিক জুটি। যার হাত ধরে জন্ম নেয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।
গাজীপুরের কাপাসিয়ার দরদরিয়া গ্রামে ১৯২৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন তাজউদ্দিন আহমেদ। যুক্তফ্রণ্টের প্রার্থী হয়ে ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে জয় লাভ করে, মাত্র ২৯ বছর বয়সেই আলোচনায় উঠে আসেন তাজউদ্দিন। ১৯৬৬, ৬৮,৭০ সালে টানা তিনবার নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। হয়ে উঠেন বঙ্গবন্ধুর নির্ভরতার জায়গা।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন, ‘যে যাকিছু বলুক না কেন তাজউদ্দিন সাহেবের উপদেশ আমার জানামতে বঙ্গবন্ধু কখনো প্রত্যাখান করেননি। তিনি ছিলেন বঙ্গুবন্ধুর সবচেয়ে ঘনিষ্ট সহচর। আমরা যখন বঙ্গবন্ধুর কাছে যেতাম উনি প্রত্যেক ব্যাপারে আমাদের বলতেন যে, তাজউদ্দিনের সাথে আলাপ করো।মুক্তিযুদ্ধকালে তাকেই আমরা নেতা বলে জেনেছি।’
পাকিস্তানের কারাগারে বন্দী বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে, মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনায় নেতৃত্ব দেন তাজউদ্দিন। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে দিনরাত এক করে, পরিবার পরিজন ছেড়ে মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময় ছুটে বেড়িয়েছেন তিনি। আন্তর্জাতিক রাজনীতির কূটকৌশল সামলে বাংলাদেশের অভ্যুদয় নিশ্চিত করার পাশাপাশি চিন্তা জুড়ে ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প, শরনার্থী শিবির।
স্বাধীন বাংলাদেশে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়া তাজউদ্দিন স্বপ্ন দেখেছিলেন সত্যিকারের সমৃদ্ধ দেশ গড়ার। সব মানুষের সমান অধিকারে বিশ্বাসী এই নেতা মাথা নত করতে চাননি সাম্রাজ্যবাদের কোনো হুমকিতেই।
সদ্য স্বাধীন দেশটির সকল সম্ভাবনাকে অঙ্কুরেই বিনষ্ট করতে, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক শত্রু চক্র সফল হয় বাংলাদেশের হৃদয় আর মস্তিষ্ককে আলাদা করে ফেলতে। ৭৪ সালে বঙ্গবন্ধুর পরামর্শে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন তাজউদ্দিন আহমেদ।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন, ‘সেদিন তিনি বলেছিলেন বঙ্গবন্ধু একদলীয় শাষণ ব্যাবস্থা প্রবর্তন করলে অবশ্যই অমাকে যোগ দিতে হতো। এই পদক্ষেপ তার জন্যও মঙ্গল জনক নয় এবং আমাদের সকলের জন্য বিপদজনক। জীবন দিয়ে সেটাই তিনি প্রমান করলেন।’
পচাত্তরের ১৫ আগষ্ট বঙ্গুবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার পর খুনিদের নিয়ন্ত্রিত মোস্তাক সরকারে যোগ দেবার প্রন্তাব ঘৃনাভরে প্রত্যাখ্যান করেন তাজউদ্দিন আহমেদ, তার ফলে ৩ই নভেম্বর জেলখানায় নির্মম ভাবে হত্যা করা হয় তাজউদ্দিন সহ জাতীয় চার নেতাকে।