পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে হার না মানা মাগুরার বীর মুক্তিযোদ্ধা হার মেনে গেলেন জীবন যুদ্ধে

মাগুরানিউজ.কমঃ

o5fbdobp-copy

মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রামে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধো করতে গিয়ে হার মানিনি। অথচ দারিদ্রের কাছে জীবন যুদ্ধে হার মেনে গেলাম। একটু মাথা গুজার জায়গা পাওয়ার আশায় কতো জনের কাছে ঘুরেছি। কিন্তু কোন ফল হয়নি। শুনেছি সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অনেক ব্যবস্থা করছে। কই! আমরাতো পাই না। মৃত্যুর পূর্বে একটু মাথা গুজার ঠাঁই হলে মরেও শান্তি পেতাম। কথা গুলো বলতে-বলতে কেঁদে ফেলেন শালিখা উপজেলার শতখালী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা হাফেজ মিয়া।

সম্প্রতি উপজেলার শতখালী গ্রামে গিয়ে দেখা যায় মুক্তিযোদ্ধা হাফেজ মিয়া তার ঝুপড়ি চালা ঘরের বারান্দায় বসে আছেন। বয়সের ভারে রোগে আক্রান্ত হয়ে হয়ে পড়েছে চেহারা। এ প্রতিবেদককে দেখে তিনি কাশতে-কাশতে সালাম ঠুকে বসতে দেওয়ার জন্য কোন একটা জিনিস খুঁজতে থাকেন। কিন্তু না পেয়ে মলিন মুখে বরে ফেলেন– কিসে বসতে দেই। দাঁড়িয়েই কথা হয় এ অসহায় মুক্তিযোদ্ধার সাথে। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে স্বক্রিয় ভাবে অংশ গ্রহন করে এবং সর্ব শক্তি দিয়ে দেশের সাধীনতা অর্জন করেছিলেন, কিন্তু দেশ স্বাধীন হলেও এখন পরাধীন হয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন সামান্য বাসগৃহের অভাবে।

এক দিকে সংসারে অভাব অনটন অন্যদিকে রোগাক্রান্ত হয়ে অসহায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন । জন্ম থেকেই ভূমিহীন নিজের কোন সহায় সম্পত্তি নেই। ৭১সালে পাক বাহিরনীর সাথে যুদ্ধ করে দেশকে পরাধীনতার হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন এখন দারিদ্রের সাথে যুদ্ধ করতে হচ্ছে তার।

এই বীর মুক্তিযোদ্ধা হলেন মাগুরার শালিখার শতখালী গ্রামের মো. হাফেজ মিয়া। তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। যার স্বারক নং ৫১-১৮৩১,সনদ নং ১৯২২১৮ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সনদ নং ২৭১৫৫, গেজেড নং-১৩৯৭। ভূমিহীন মুক্তিযোদ্ধাদের পূর্নর বাসনের জন্য সরকারি তহবিল থেকে কোটি কোটি টাকা বরাদ্ধ হলেও প্রকৃত পক্ষে গরীব অসহায় মুক্তিযোদ্ধারা পাননি বলে অভিযোগ করে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।

একই সাথে তিনি আক্ষেপ করে বলেন যে সমস্ত মুক্তিযোদ্ধারা আর্থিক ভাবে সচ্ছল, ক্ষমতা ও টাকার জোরে তারাই সকল সুবিধা ভোগ করছে। কিন্তু আমার মত যারা নিরিহ তারা দু মুঠো ভাত ও বাসস্থানের জন্য সাধীনতার ৪৩ বছর পরও মানুষের দ্বারে-দ্বারে ঘুরে বেড়াতে হচ্ছে। মোটা অংকের টাকা দিতে না পারায় নিজের ছেলেকে নৈশ্যপ্রহরী পদে চাকরি দিতে পারলামনা।

উল্লেখ্য, এক বছর পূর্বে উক্ত পদে শতখালী শিংহেশ্বর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তার পুত্র মনিরুল ইসলাম আবেদন করে ছিলেন। এ ব্যাপারে এলাকাবাসি আক্ষেপ করে বলেন স্বাধীন দেশের মাটিতে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার আজও মাথা গোজার ঠাঁই হলনা। 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

September ২০২৩
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Aug    
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০  

ফেসবুকে আমরা

বিভাগ

দিনপঞ্জিকা

September ২০২৩
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Aug    
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০  
%d bloggers like this: