মাগুরানিউজ.কমঃ
মাগুরাতে এখন খেজুরগুড় উৎপাদনের মহোৎসব চলছে। ভরা এ শীত মৌসুমে খেজুরের রস থেকে এসবগুড় উৎপাদন করা হচ্ছে। প্রতিদিন ভোর ৬টা থেকে সকাল ১১টা পর্যন্ত চলে গুড় তৈরির কাজ। নতুন কেউ এসব দেখলে তার বেশ অভিজ্ঞতা হবে। কীভাবে খেজুরের রস থেকে গুড় তৈরি হয় সেটা জানা হয়ে যাবে তার। এখানে সবই চলছে সনাতন পদ্ধতিতে। এর কোনো কিছুই স্থানীয় কিংবা কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রণালয়ের কাছে হিসেব নেই। এই এলাকায় কতগুলো খেজুর গাছ আছে তার কোনো তথ্য নেই তাদের কাছে। উৎপাদিত গুড় বা এ থেকে কি পরিমাণ অর্থ উপার্জন হচ্ছে- কোনোটারই তথ্য নেই কৃষি বিভাগের কাছে। অথচ মাগুরার কৃষকদের গ্রামীণ অর্থনীতিকে এই গুড় অনেক শক্তিশালী করে রেখেছে। এ বিষয়টি সবার অগোচরেই থেকে গেছে।
গুড় বিক্রির টাকায় স্থানীয় কৃষকরা আর্থিকভাবে সমৃদ্ধ হচ্ছেন। বললেন স্থানীয় কৃষকরা। তবে কাঙ্খিত দাম পেয়ে চাষিরাও বেজায় খুশি।
মাগুরার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, খেজুর গাছ থেকে নামানো রস থেকে চাষিরা গুড় উৎপাদন করছেন। শীতের শুরু থেকে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ শুরু হয়। প্রতিদিন আহরিত খেজুর রস থেকে উৎপাদন করা হচ্ছে উন্নতমানের খেজরগুড়। এসব গুড় চোখে পড়লেই জিভে পানি চলে আসে।এসব গুড় দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি খেতেও সুস্বাদু।
মাগুরা নতুন বাজারে রোকন হোসেন, আলিম মিয়া, রফিকুল ইসলামসহ একাধিক খুচরা খেজুরগুড় ব্যবসায়ী গুড় বিক্রি করছেন। তারা ৬৫ থেকে ৭০ টাকা দরে প্রতি কেজি খেজুরগুড় বিক্রি করছেন। গুড় ক্রেতা ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘খেজুরগুড় দিয়ে পায়েস, ভাপা পিঠা, মুড়িমুড়কি, নাড়ু, মোয়া ও চায়ে বেশ স্বাদ হয়। এজন্য এসব গুড়ের চাহিদাও একটু বেশি। বাসায় সবার পছন্দ।’
পাশের খেজুরগুড়ের আড়ৎদার দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘গাছ থেকে পুরোদমে রস নামানো শুরু হয়েছে। বাজারে প্রচুর গুড় উঠছে। দামও ভাল। এসব গুড় স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হচ্ছে। এসব গুড় কেজিপ্রতি ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে খুচরা বাজারে বিক্রি হয়।’
মাগুরার শালিখা এলাকার খেজুরগুড় উৎপাদনকারী চাষি সাইফুল ইসলাম জানান, ৭০টি গাছের সংগ্রহ করা রস থেকে প্রতিদিন ১৭ কেজি করে খেজুরগুড় উৎপাদন হয়। প্রতিকেজি গুড় আড়তে পাইকারী ৫০ টাকা দরে জমা দেওয়া হয়। এক কেজি গুড় উৎপাদনে খরচ পড়ে প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ টাকা।
হাজিপুর এলাকার আশরাফুল আলম বলেন, ‘নাটোরের প্রতিটি কৃষকের ঘরে ঘরে এখন খেজুরের রস থেকে গুড় উৎপাদন করা হচ্ছে। প্রতি বছর শীতকালের এ মৌসুমে শুধু নাটোরেই ১২ থেকে ১৫ কোটি টাকার খেজুরগুড় উৎপাদিত হয়। এসবগুড় স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন জেলায় রফতানি হচ্ছে। গুড়ের মান উন্নত হওয়ায় চাহিদাও ভালো।’