শ্রীপুরে পাটের আঁশের চেয়ে পাটকাঠির কদর বেড়েছে কয়েক গুণ।

মহসিন মোল্যা, বিশেষ প্রতিবেদক-

শ্রীপুরে চলতি মৌসুমে পানির অভাবে পাটের আঁশে যে ক্ষতি হয়েছে পাটকাঠি দিয়ে তা পুষিয়ে নিতে চান চাষিরা। উপজেলায় এবার পাটের আঁশের চেয়ে পাটকাঠির কদর বেড়েছে কয়েক গুণ। বাণিজ্যিকভাবে পাটকাঠির ব্যবহার বৃদ্ধি ও দাম বেশি হওয়ায় এ পাটকাঠির যত নিচ্ছেন কৃষকরা। কৃষকরা জানিয়েছেন- বৃষ্টি আর বর্ষার পানির অভাবে এবার পাট জাগ দিতে হিমশিম খেতে হয় চাষিদের। এমনকি পানির অভাবে ক্ষেতেই পাট শুকিয়ে মরে গেছে। এমন পরিস্থিতে কৃষকরা,পরিত্যাক্ত ডোবা, নোংরা জলাশায় ,পুকুর ও মাটি খুঁড়ে পাট জাগ দিতে বাধ্য হন। এতে নষ্ট হয়ে যায় পাটের রং। এতে পাটের দামও তুলনামূলক কম পাচ্ছেন কৃষকরা।

উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে ভালো মানের পাটের মূল্য মূল্য ২৫০০ থেকে ২৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে ও নিম্নমানের প্রতি মণ পাটের মূল্য ২০০০ টাকা থেকে ২২০০ টাকা। তাই পাটের আঁশের লোকসান পুষিয়ে নিতে পাটকাঠিতেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন চাষিরা।

উপজেলার কাদিরপাড়া ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামের পাট চাষি বক্কর মোল্লা বলেন, পানির সমস্যার কারণের এবার পাট নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছি। মাটি খুঁড়ে আর নোংরা জলাশায় পাট জাগ দিয়ে পাটের রং নষ্ট হওয়ায় দাম প্রতিমণে পাঁচশ থেকে ছয়শ টাকা কম পেতে হচ্ছে। তবে পাটকাঠির রঙের তেমন পরিবর্তন হয়নি। আবার পাটকাঠির দামও বেশি। তাই পাটকাঠিতে গুরুত্ব দিয়ে যত্ন নিতে শুরু করেছি।জ্বালানী হিসেবে, বাড়িঘর ও সবজি ক্ষেতের বেড়া, মাচা, পান বরজ, ইত্যাদি কাজে পাটকাঠির ব্যবহার দীর্ঘকাল আগে থেকেই হয়ে আসছে।

তারা জানান, এক বিঘা জমিতে ১৮ থেকে ২০ মণ পাট হয়। তা থেকে প্রায় ২ হাজার আঁটি পাঠকাঠি বের হয়। প্রতি আঁটি পাটিকাঠি তিন থেকে পাঁচ টাকা দরে বিক্রি করছি। এতে প্রতিবিঘা জমিতে প্রায় ১০ হাজার টাকার পাটকাঠি বিক্রি করতে পারবো।

উপজেলা ঘাসিয়ারা গ্রামের শফিকুল ইসলাম বলেন, উপজেলার নাকোল ইউনিয়নে একটি পাটকাঠির মিল রয়েছে। সেই মিল থেকে ক্রেতা এসে পাটকাঠি কিনে নেয়। আমরা নিজেরাও মিল মালিকের নিকট পাটকাঠি নছিমন যোগে পৌছে দিই। এতে এবার পাটকাঠি বিক্রি করে পাটের লোকসানও অনেকটা পুষিয়ে যাবে। পাটের পাশাপাশি পাটকাঠির বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার বাড়ায় একই ফসলে আমাদের বাড়তি আয়ের ব্যবস্থা হয়েছে।

বিশিষ্ঠ পাট ব্যাবসায়ী মকিদ মোল্লা বলেন, পাটখড়ি বা পাটকাঠির কার্বন চারকোল নামে পরিচিত। চীনসহ বিভিন্ন দেশে পাটকাঠি পুড়িয়ে পাওয়া কার্বন থেকে আতশবাজি, কার্বন পেপার, প্রিন্টার ও ফটোকপিয়ারের কালি, মোবাইলের ব্যাটারি, দাঁত পরিস্কারের ওষুধ ও সারসহ নানা পণ্য তৈরি করা হয়। এসব কারখানা এ এলাকায় স্থাপন করা গেলে পাটকাঠির চাহিদা বৃদ্ধি পাবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সালমা জাহান নিপা, এবার উপজেলায় ৯ হাজার ৬ শ ২০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে ১৩.২ বেল পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল।

December ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Nov    
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০৩১  

ফেসবুকে আমরা

বিভাগ

দিনপঞ্জিকা

December ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Nov    
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০৩১  
%d bloggers like this: