মাগুরানিউজ.কমঃ
বিশেষ প্রতিবেদন-
আবু তালেব ও খাদিজা বেগম এই দুজনের নিখাদ ভালোবাসার গল্প মাগুরার মহম্মদপুরের মানুষের মুখে মুখে ফেরে। ৪০ বছর ঘরসংসার করছেন। চোখে আলো না থাকায় স্ত্রীর মুখ কোনো দিন দেখতে পাননি তিনি। আর জেনেশুনেই একজন অন্ধ ব্যক্তিকে বিয়ে করেছেন খাদিজা বেগম।
মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার ধোয়াইল গ্রামের বাসিন্দা আবু তালেব মোল্যা (৬০)। অজ্ঞাত রোগে ২০ বছর বয়সে তিনি অন্ধ হয়ে যান। বাবা-মা অন্ধ ছেলের বিয়ে দেওয়ার জন্য মেয়ে খুঁজতে থাকেন। কিন্তু জেনেশুনে কোনো বাবাই একজন অন্ধের হাতে মেয়েকে তুলে দিতে চান না। এরই মধ্যে পাশের শ্যামনগর গ্রামের আকবর আলীর মেয়ে খাদিজা বেগম আবু তালেবকে বিয়ে করতে রাজি হন। দুই পরিবারের সম্মতিতে তাদের বিয়ে হয়।
বিয়ের পর খাদিজা অন্ধ স্বামীর দায়ভার নিজের কাঁধে তুলে নেন। এ নিয়ে তার নেই কোনো আক্ষেপ।
নিঃসন্তান এই দম্পতির আয়ের উৎস দুটি গাভি। মাত্র ছয় শতক জমির ওপর বসতবাড়ি। দুধ বিক্রি করেই চলে তাদের সংসার। অভাব নিত্যসঙ্গী হলেও কোনো দিন মানুষের কাছে হাত পাতেননি খাদিজা। তার স্বামীকেও হাত পাততে দেননি। নিজের আয় দিয়ে স্বামীর মুখে দুবেলা ভাত তুলে দিচ্ছেন তিনি।
খাদিজা বেগম জানান, তার স্বামী তালেবকে বিয়ের আগে বেশ কয়েকবার দেখেন। মায়াভরা চেহারা দেখে তার প্রতি দুর্বলতা তৈরি হয়। জেনেশুনেই একজন অন্ধ মানুষের জীবনের ভার নিজের কাঁধে তুলে নেন। অন্যত্র বিয়ে হলে হয়তো খেয়েপরে এর চেয়ে ভালো থাকতে পারতেন। কিন্তু একজন দৃষ্টিহীন অচল মানুষের পাশে থাকার মধ্যে সান্ত্বনা খোঁজেন খাদিজা বেগম।
আবু তালেব মোল্যা বলেন, ‘অন্ধ হওয়ার পর কোনো নারী তাকে বিয়ে করবে- এটা ছিল অলীক কল্পনা। খাদিজা ভালোবেসেই আমার বোঝা সারা জীবন বয়ে বেড়াচ্ছে।’
মাগুরা নিউজের শুভকামনা রইলো আবু তালেব ও খাদিজা বেগম দম্পতির জন্য।