মাগুরানিউজ.কমঃ
জাকারিয়া মনির-ইতালি থেকে : ষড়ঋতুর এদেশে শীতের পালাবদলে আসে বসন্ত। ফাল্গুন ও চৈত্র নিয়ে ঋতুরাজ বসন্তের সময়কাল। এ সময় প্রকৃতি তার রূপের যৌবনে চারপাশ মাতিয়ে রাখে। শীতের রুক্ষতায় ঝরে পড়ে গাছের পাতা। শূন্য ডালগুলো কানায় কানায় পত্রপল্লব আর মুকুলে পূর্ণ হয়ে ওঠে ফাল্গুনের শুরুতে। ঋতুরাজ বসন্ত তার স্বকীয় চেহারায় শুরু করে রাজত্ব।
বসন্ত তারুণ্যেরই ঋতু, তাই সবারই মনে বেজে ওঠে, কবির এ বাণী- ‘বসন্ত ছুঁয়েছে আমাকে। ঘুমন্ত মন তাই জেগেছে, পয়লা ফাল্গুন আনন্দের দিনে।’
ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে পরিবেশ ও বাতাসের ঘ্রাণেরও পরিবর্তন হয়। ঠিক শীতের পরে বসন্ত যখন আসতো আমরাও এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত অলিতে গলিতে ঘুরে ঘুরে বসন্তের স্বাদ নিতাম।আয়োজনের শেষ আয়োজনটা হতো বন্ধুদের নিয়ে বাড়ীর ছাদের উপর। চলতো রাতভর খাওয়া-দাওয়া, গান-বাজনা আড্ডার উৎসব।
সেই উৎসব এখনো গভীর দাগ কেটে। অনেক সময় নিজে নিজে ভাবি, যদি জাদুর পরশে বাংলাদেশের কোনো এক উৎসবে সামিল হয়ে ভোর হওয়ার আগেই আবার চলে আসতাম নিজ কর্মস্থলে, তবে কতোই না তৃপ্তি পেতাম। আসলেই রাতের উৎসবের আবেগ অন্যরকম। রাত যত গভীর হতে থাকে নীরবতা তত বাড়তে থাকে সঙ্গে মানুষও আবেগি হতে থাকে। আমরা বন্ধুরা ঐ সময়ে আবেগে কেঁদে উঠতাম কারো ব্যর্থতাই, কারো সফলতায় এবং রাত শেষ হয়ে যখন প্রকৃতির নিয়মে ভোর হওয়া শুরু হতো আমরাও ঠিক নতুন ভাবে নিজেরকে উজ্জীবিত করে শক্তি সঞ্চার করে যার যার বাড়ি ফিরতাম।
বহু প্রকৃতি পরিবর্তনের সৌন্দর্য ও পহেলা ফাল্গুনের স্মৃতি আজ প্রবাসে বসে স্মরণ করা ছাড়া উপভোগ করার বিন্দু মাত্র প্রয়াশ নেই। আমাদের দেশ বাংলাদেশের সৌন্দর্য নিয়ে অসংখ্য কবি সাহিত্যিক কবিতা লিখেছেন। পৃথিবীর অন্য কোনো দেশের ইতিহাসে হয়তো এতো কবিতা রচিত হয়নি। আমি এই বিশাল সৃষ্টির একজন ছোট অনুরাগী। তবে সেখানে আবেগ আর ভালোবাসার ঘাটতি নেই এতোটুকু। তাইতো প্রতিবছর বসন্ত এলে প্রবাসী মন আমার ঘুরে মাগুরার পথে পথে।