মাগুরানিউজ.কমঃ বিশেষ প্রতিবেদক-
আসন্ন রশিয়া বিশ্বকাপ ফুটবল উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার মাগুরায় প্রদর্শন করা হয়েছে সাড়ে ৫ কিমি লম্বা জার্মানীর পতাকা। এই পতাকা দেখতে তারা ঢাকা থেকে মাগুরার প্রত্যন্ত গ্রাম নিশ্চিন্তপুর এসেছিলেন জার্মান কূটনীতিক।
আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টায় মাগুরা সদর উপজেলার চাউলিয়া ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর হাইস্কুল মাঠে এই সাড়ে ৫কিলোমিটার পতাকা প্রদর্শন করা হয়। সেখানে শুভেচ্ছা জানাতে আসেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মান দুতাবাসের কুটনীতিক কারেন উইজোরা ও শিক্ষা সংস্কৃতিক কর্মকর্তা তামারা কবির।
উপস্থিত ছিলেন মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ হাসান সিরাজ সুজা, চাউলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজার রহমান, আমজাদ হোসেনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকসহ সুধিবৃন্দ ও গ্রামবাসীরা। ঢাকার জার্মান দুতাবাসের দুই কর্মকর্তা নিশ্চিন্তপুর হাইস্কুল মাঠে এসে পৌঁছালে তাদের ফুল দিয়ে শুভাচ্ছো জানানো হয়।
আমজাদ হোসেন জানান, তিনি ২০১৪ সালে সাড়ে ৩কিঃমিঃ পতাকা তৈরী করেছিলেন এবার ২০১৮ সালে আরো ২ কিঃমিঃ বাড়িয়ে সাড়ে ৫ কিলোমিটার করেছেন।
মাগুরা সদর উপজেলার ঘোড়ামারা গ্রামের বাসিন্দা কৃষক আমজাদ হোসেন ১০ সন্তানের জনক । ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলের সময় ৩০ শতক জমি বিক্রি করে সাড়ে ৩ কিমি লম্বা জার্মানীর পতাকা তৈরী করে সাড়া ফেলে দেন। সেই পতাকা দেখতে মাগুরায় আসনে জার্মানীর রাষ্ট্রদূত। মাগুরা বীর মুক্তিযোদ্ধা স্টেডিয়ামে সেই পতাকা প্রদর্শন করা হয়।
আমজাদ অনুষ্ঠানে জানান, এই পতাকা অভিযান চলবে। এ বছর বিশ্বকাপে জার্মান চ্যাম্পিয়ন হলে ২০২২ সালের বিশ্বকাপে ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ পতাকা বানাবেন, যা মাগুরা ভায়না মোড় থেকে সীমাখালী পর্যন্ত পথ জুড়ে প্রদর্শিত হবে।
আমজাদ হোসেন মাগুরার সদর উপজেলার ঘোড়ামারা গ্রামের নেহাল উদ্দিন মোল্যার ছেলে। পেশায় একজন সাধারণ কৃষক। ১৯৮৭ সালে তিনি কঠিন রোগে আক্রান্ত হন। সে সময় অনেক চিকিৎসা নিয়েও কোন সুফল পাননি। শেষে মাগুরার মনোরঞ্জন কবিরাজ নামের আয়ুর্বেদিক এক চিকিৎসকের পরামর্শে জার্মানির হোমিওপ্যাথিক ওষুধ সেবনের পরই তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন। তারপর থেকেই তিনি জার্মানের প্রতি আসক্ত হয়ে ওঠেন। সে সুত্র ধরেই বিশ্বকাপে জার্মান ফুটবল দলের ভক্ত বনে যান বলে জানান আমজান হোসেন।
বাংলাদেশে অবস্থিত জার্মান দূতাবাসের কর্মকর্তা ক্যারেন উইজোরা বলেন, ‘আমরা আমজাদের এ উদ্যোগে অভিভূত। এটি এখন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জার্মান পতাকা। তাই পতাকাটি দেখতে আমরা মাগুরায় ছুটে এসেছি। আমরা জানি আমজাদ অনেক কষ্ট করে এটি তৈরি করেছেন। তাই আমাদের কর্তব্য তার পাশে থাকা। আমরা তার পাশে থাকবো এবং আমজাদের জার্মানি সফরের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবো।’