মহসিন মোল্যা, বিশেষ প্রতিবেদক-
শ্রীপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান লাঙ্গলবাঁধ দারুল ইসলাম সিদ্দিকীয়া আলিম মাদ্রাসার মাঠে স্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। জলাবদ্ধতার কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ১৯৭৫ সালে এ মাদ্রাসাটি স্থাপিত হয়। সেই থেকে হাঁটি হাঁটি পায়ে এগিয়ে চলছে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা কার্যক্রম। পানি নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা না থাকায় বর্ষাকালে মাঠে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। যে কারণে মাঠটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
বুধবার সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সামান্য বৃষ্টি হলেই স্থায়ী জলাবদ্ধতার কবলে পড়েছে মাঠটি। মাঠটি নিচু হওয়ায় বাজার ও আশেপাশের সব পানি মাদ্রাসার মাঠে এসে জমা হয়। মাঠে পানি জমে থাকায় শিক্ষার্থীরা অ্যাসেম্বলি করতে পারে না। টিফিনচলাকালীন মাঠে খেলাধুলার কোন সুযোগ নেই। হাটু পানি পেরিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যেতে হয় শ্রেণীকক্ষে। কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ থেমে গেলেও এখনো মাঠে হাটু পানি জমে রয়েছে। মাঠে বড় বড় ঘাস জম্মেছে। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় জলাবদ্ধতায় চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। প্রথম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী থাকলেও উপস্থিতির হার অনেক কম। যার ফলে লেখাপড়া চরম বিঘ্নিত হচ্ছে। জলাবদ্ধতার কারণে পানি পঁচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। পানি বাহিত বিভিন্ন রোগ বালাইয়ের পাশাপাশি চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা জানায়, তাদের হাটু পানি পেরিয়ে মাদ্রাসার শ্রেণিকক্ষে যেতে হয়। মাঠে অ্যাসেম্বলি ও খেলাধুলা থেকে আমরা বঞ্চিত। দীর্ঘদিন পানি বদ্ধ থাকায় পানিতে নামলেই চুলকানি শুরু হয়। আমাদের সকল সময় শ্রেণিকক্ষের মধ্যে থাকতে হয়৷
লাঙ্গলবাঁধ দারুল ইসলাম সিদ্দিকীয়া আলিম মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষকের জানান, মাদ্রাসার মাঠের পানি নিষ্কাশনের কোন পথ না থাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ময়লা-দুর্গন্ধযুক্ত পানিতে পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। আমরা দ্রুত এ সমস্যার সমাধান চাই।
লাঙ্গলবাঁধ দারুল ইসলাম সিদ্দিকীয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. হারুনুর রশিদ বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসন ও শিক্ষার পরিবেশ রক্ষায় মাঠ ভরাট ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা জরুরি। ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সকল সমস্যা সমাধানে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
লাঙ্গলবাঁধ দারুল ইসলাম সিদ্দিকীয়া আলিম মাদ্রাসার পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল হাদী শামীম বলেন, বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়কে অবহিত করা হয়েছে। মাঠে বালু ভরাট এবং পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনের ব্যবস্থা করা হলে এ সমস্যা আর থাকবে না। আশা করছি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে এ সমস্যার সমাধান হবে।
শ্রীপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুল গণি বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হবে শিগগিরই। এবং সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হবে।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাখী ব্যানার্জী বলেন, এ বিষয়ে আমাকে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করা গেলে মাঠে বালু ভরাট করে কোন উপকারে আসবে না। আগে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। খুব দ্রুতই এ সমস্যা সমাধানে কাজ করা হবে।
Like this:
Like Loading...