মাগুরা নিউজ.কম:যৌতুক ও বেতনের টাকার হাতে তুলে না দেয়ায় পাষন্ড স্বামীর নির্মম নির্যাতনে হাসপাতালে বিছনায় শুয়ে কাতরাচ্ছেন মাগুরার শান্তিবাগ এলাকার পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের স্বাস্থ্য সহকারি জুলেখা পারভীন (৪৫)। গত রাত ১২টার দিকে তাকে মাগুরা সদরহাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে এ ঘটনাকে পরকিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় নাটক হিসেবে দাবী করেছেন অভিযুুক্ত স্বামী।হাসপাতালে ভর্তি জুলেখা পারভীন অভিযোগ করেন- ২৮ বছর আগে মাগুরা সদর উপজেলার রায়গ্রাম এলাকার আব্দুস সালাম মোল্যার ছেলে রেজাউল ইসলাম ইয়াসিন এর সাথে তার বিয়ে হয়। ইয়াসিন জেলা একাউন্স অফিসের কর্মকর্তা। বর্তমানে তিনি ফরিদপুরে কর্মরত আছেন।বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন সময় তিনি জুলেখাকে বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক হিসেবে টাকা পয়সা এনে দেয়ার দাবীতে প্রায়ই মারপিট করে আসছিল। মাঝে কয়েকদফা বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে ইয়াসিনকে দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে জুলেখা পরিবার পরিকল্পনা সহকারি হিসেবে সরকারি চাকরি পেলে স্বামী ইয়াসিন বেতনের পুরো টাকাই তার হাতে তুলে দেয়ার দাবীতেও তাকে মারপিট করে।
এরমাঝে তাদের সংসারে ৪টি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। পুত্র সন্তান জন্মদিতে না পারার অজুহাতেও পাষন্ড স্বামী ইয়াসিন তাকে প্রায়ই মারপিট করে বলে জুলেখা অভিযোগ করেন। সর্বশেষ শনিবার বাড়ি তৈরীর খরচ বাবদ বাবার বাড়ি থেকে ৫লাখ টাকা এনে দেয়ার জন্য ইয়াসিন জুলেখাকে চাপ দেয়। জুলেখা তাতে রাজী না হওয়ায় ওইদিন রাত ১২টার দিকে তাকে লোহার রড দিয়ে মাথায় প্রচন্ড আঘাত করে। এতে তার মাথা ফেটে গুরুতর যখম হয়। এ সময় তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে জুলেখাকে উদ্ধার করে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবী করেন। এ ব্যাপারে মাগুরা সদর থানায় মামলা করা হবে বলে জুলেখা জানান। জুলেখার ভাই মোঃ সাহেব আলী জানান- পাষন্ড স্বামী ইয়াসিন জুলেখাকে প্রায়ই এভাবে মারপিট করে। দুবছর আগে একইভাবে যৌতুকের দাবীতে জুলেখার শরীরে কেরসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় ইয়াসিন। এ সময় মারাত্মক দগ্ধ অবস্থায় জুলেখাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সে যাত্রা জুলেখা কোনমতে প্রাণে বেঁচে যায়। এ ব্যাপারে ইয়াসিনের বিরুদ্ধে যৌতুক ও নারী নির্যাতন আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত স্বামী রেজাউল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি স্ত্রীর বিরুদ্ধে পরকিয়া প্রেমের অভিযোগ তোলেন। স্ত্রীর পরকিয়ায় বাধা দিতেই তিনি এ নাটক সাজিয়েছেন বলে অভেযোগ করেন রেজাউল ইসলাম।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ মাগুরা জেলা শাখার সভাপতি মমতাজ বেগম চামেলী জানান- শিক্ষিত মানুষেরা যখন এভাবে নারীর উপর নির্যাতন চালান তখন তাকে কসাই ছাড়া কিছুই বলা যায় না। আমরা এ নির্যাতনের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি ও এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবী করছি।