ন্যাশনালডেস্কঃ
নন্দিত কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের দ্বিতীয় মৃত্যু বার্ষিকী শনিবার। এ উপলক্ষ্যে গাজীপুরে তার গড়া নুহাশ পল্লীতে কোরানখানি, কবর জিয়ারত, দোয়া ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করছেন তার স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন। এবারের মৃত্যু বার্ষিকীতে হুমায়ূন আহমেদের একটি স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে। এর পাশাপাশি ১০০ জন হিমু ভক্তের লেখা ‘হিমু পরিবহন’ নামে একটি বইয়ের মোড়ক এদিন উন্মোচন করা হবে।
নুহাশ পল্লীর ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বুলবুল জানান, প্রয়াত কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে শনিবার সকাল হতে আয়োজিত কোরআন পাঠ, কবর জিয়ারত, দোয়া এবং ইফতার মাহফিলে নুহাশ পল্লীর পার্শ্ববর্তী কয়েকটি মাদ্রাসা ও এতিমখানার ছাত্ররা যোগ দেবেন। এছাড়াও হুমায়ূনের স্ত্রী শাওন, ছেলে নিষাদ ও নিনিতসহ পরিবারের সদস্য এবং ভক্ত-বন্ধুরা কবর জিয়ারত ও ইফতারে অংশ নেবেন। ওই দিন অর্ধশতাধিক মানুষের ইফতারের আয়োজন করা হচ্ছে।
হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত নানা কর্মসূচি ও পরিকল্পনা বাস্তবায়ন, স্বামীর কবর জিয়ারত কাজ তদারকির জন্য বৃহস্পতিবার রাতেই নিষাদ ও নিনিতকে নিয়ে শাওন স্বামীর প্রিয় নুহাশ পল্লীতে এসে অবস্থান করছেন এবং ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
তিনি আরো জানান, ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পর কিছুটা সুস্থ হয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে এসে কিছুদিন নুহাশ পল্লীতেই সময় কাটান হুমায়ূন আহমেদ। তিনি পুনঃরায় অসুস্থ হয়ে শেষবারের মতো (দ্বিতীয় দফা) যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার সময় বলেছিলেন, সুস্থ হয়ে আবার দেশে এসে সর্বপ্রথম তিনি নুহাশ পল্লীর পুকুর ঘাটকে মার্বেল পাথর দিয়ে নির্মাণ করবেন। হুমায়ূন আহমেদের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকীকে কেন্দ্র করে তার ওই ইচ্ছাকে (স্বপ্ন) গুরুত্ব দিয়ে প্রিয় নুহাশ পল্লীর ওই পুকুর ঘাটকে মার্বেল পাথর দিয়ে নির্মাণের কাজ ইতোমধ্যে প্রায় সম্পন্ন করা হয়েছে।
এছাড়াও হুমায়ূন আহমেদ প্রতিষ্ঠিত নেত্রকোনার কুতুবপুরের শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠে মিলাদ, দোয়া ও রাতের খাবারের আয়োজন করেছেন তার বই প্রকাশকারী ১৪ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান।
বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে গত বছরের ১৯ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬৪ বছর বয়সে মারা যান। ২৪ জুলাই তাকে গাজীপুরের নুহাশ পল্লীতে দাফন করা হয়। ২০১১ সালে তার অন্ত্রে ক্যান্সার ধরা পড়ে। যুক্তরাষ্ট্রে কয়েক দফা চিকিৎসাও দেয়া হয়। কিন্তু তিনি নিজেকে ক্যান্সার থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত করতে পারেননি।
হুমায়ূন আহমেদ ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষক হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য জগতে এসে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। লেখালেখির পাশাপাশি নাটক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবেও তিনি জনপ্রিয় ছিলেন।