মাগুরানিউজ.কমঃ
আজকাল শহরাঞ্চলে নানা কারণে যৌথ পরিবার প্রায় দেখা যায় না বললেই চলে৷ গ্রামাঞ্চলে এখনো এর অস্তিত্ব তবুও টিকে রয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে সন্তানের সঠিক বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে কোনটি বেশি প্রয়োজন? একটু দেখে নেওয়া যাক৷
যৌথ পরিবারের বেশ কিছু ইতিবাচক দিক আছে, যেমন- এক সঙ্গে বেড়ে ওঠা, ভাইবোনদের মধ্যে খুব ভালো বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে প্রভৃতি। সন্তানরা আদান-প্রদানের মনোভাব নিয়ে বেড়ে ওঠে যৌথ পরিবারে। ফলে মনের প্রসারতা ও উদারতা তৈরি হয়। খুব খারাপ সময়গুলোও সম্মিলিতভাবে আনন্দের সঙ্গে পার করতে শেখে বাচ্চারা।
এ ছাড়া যৌথ পরিবারের ছোট থেকেই সন্তানরা মানুষের প্রতি সহযোগিতা ও সহমর্মিতা দেখে বড় হয়। সবচেয়ে বড় যে বিষয়টি যৌথ পরিবারের সন্তানদের মধ্যে তৈরি হয় তা হচ্ছে ‘সহনশীলতা’। উল্লিখিত ভালো দিকগুলোর পাশাপাশি কিছু নিতিবাচক দিকও আছে। হয়তো এই নীতিবাচক দিকগুলো আছে বলেই যৌথ পরিবার ধীরে ধীরে নিশ্চিহ্ন হয়ে পড়ছে।
একক পরিবারে মা-বাবা ও সন্তানের মধ্যেই আবেগের গণ্ডি তৈরি হয় ও সীমাবদ্ধ থাকে। পরিবারের যতটুকু সুযোগ-সুবিধা, পুরোটাই পায় সন্তানরা আবার যতটুকু অসুবিধা বা সমস্যা পুরোটাই সন্তানদের মেনে নিয়ে বড় হতে হয়।
তাই আপনার সন্তানকে এক সুস্থ জীবন দিতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিসের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে৷ সেগুলি হল
১. আপনার সন্তান একক কিংবা যৌথ যেকোনো পরিবারের সদস্য হোক না কেন, সে তার মা-বাবার কাছ থেকে সঠিক শিক্ষা পাচ্ছে কি না তার দিকে লক্ষ্য রাখবেন।
২. কখনোই সন্তানকে আত্মীয়দের সম্পর্কে খারাপ ধারণা দেবেন না, বড় হয়ে নিজেই বুঝে নেবে সেটা।
৩. লক্ষ্য করুন, আপনার সন্তানটি পরিবারের আর পাঁচ-দশটি মানুষের সঙ্গে মিশে যা শিখত, যতখানি হাসিখুশিভাবে বেড়ে উঠত, আপনি একা কি তা পারছেন করতে?
৪. পরিবেশ ও পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিন এখনই যৌথ পরিবার থেকে বের হয়ে একক হবেন কি না। সময় নিন কিছুটা, কারণ পরিস্থিতির পরিবর্তন আসে, আমাদের সহনশীলতা, মোকাবিলা করার ক্ষমতা ও বুদ্ধির পরিপক্বতা- সব কিছুই পরিবর্তিত হয়। এগুলো কাজে লাগানোর চেষ্টা করুন। আসলে যে মা-বাবা যৌথ পরিবারে ভালো ছিলেন না তিনি একক হওয়ার পর ভালো থাকবেন- তাও একদম সঠিক করে বলা যায় না। সবার সঙ্গে ভাল করে থাকতে জানতে হয়৷
তবে এক কথায় বলা যাবে না যে একক পরিবার ভালো না যৌথ পরিবার। সুস্থ ও সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠার সুযোগ ও পরিবেশ অবশ্যই দরকার। একক বা যৌথ দুটোর কোনোটিতে চমৎকার বেড়ে ওঠা যাবে সেটাও সুনির্দিষ্ট করে বলা যাবে না। আপনি আপনার অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নিন৷