রমজানে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস

images (7)রমজান মাসে খাদ্যগ্রহণেও সংযমী হওয়া প্রয়োজন। রমজানে স্বাস্থ্যকর খাদ্যগ্রহণ একই সঙ্গে আধ্যাত্মিক ও শারীরিক চাহিদা মেটাতে পারে। এ মাসের উপযোগী স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও ডায়েট সম্পর্কে কিছু তথ্য রোজাদারদের জানা থাকলে ভালো হয়। চলুন জেনে নেই রমজানের সময় খাদ্যাভ্যাস কেমন হওয়া উচিত।

পানি ও শরবত বেশী করে পান করুন:

গরমে সময় রোজা রাখা এমনিতেই কঠিন। তার পরে সারাদিন পানি খাওয়া হয় না। কম পানি পান করলে শরীরের অঙ্গগুলোর ঠিকমতো কাজ করতে পারে না, হজমেও সমস্যা হয়। তাই রোজা ভাঙার পরে দেহে পানির চাহিদা মেটাতে বেশী করে পানি পান করতে হবে।

কোমল পানীয় বাদ দিয়ে ডাবের পানি পান করুন:

ডাবের পানিতে আছে বেশ কিছু খনিজ পদার্থ যেগুলো শরীরের জন্য খুব দরকার। ডাবের পানিতে রয়েছে পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ক্লোরিন ইত্যাদির লবণ। ডাবের পানির সাথে লবনের অভাব পূরণ করতে খাবার স্যালাইনও পান করতে পারেন। কোমল পানীয় এসডিটি, বুক জ্বালা, আলসার, কিডনি ও লিভারের ওপরে চাপ দেয়া থেকে শুরু করে আরো বেশ কিছু ক্ষতিকর কাজ করে।

ভাজা পোড়া না খাওয়া:

সারাদিন রোজা রাখার ফলে হজম শক্তি এমনিতেই দুর্বল থাকে। এ সময় তেলে ভাজা খাবার বেশী খেলে ঝামেলা হওয়ায় স্বাভাবিক। এতে বদহজম ও এসিডিটির সুযোগ বাড়ায়। বাইরের কেনা খাবার আরো বিপদজনক।

আঁশযুক্ত খাবার বেশী খেতে হবে:

আঁশযুক্ত খাবার পেটে থাকে অনেকক্ষণ, হজম হতে দেরি হয়। তাই ক্ষুধা লাগে কম। ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ঠিক রাখতেও এগুলো সাহায্য করে। সেহেরির সময় আঁশ জাতীয় খাবার বেশী করে খাবেন। তাছাড়া রমজানে অনেকেই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় পড়েন। তাদের জন্য আঁশযুক্ত খাবার খুব দরকার। বেশী করে পানি, খাবার বেশী আঁশ, মাঝে মাঝে ইসবগুলের ভুশি খেলে ডাক্তাররের কাছে আর দৌড়াতে হবে না।

একবারে বেশী করে খাবার খাবেন না:

ইফতারির সময় আজানের শব্দ শুনেই হাপুস হুপুস করে খাবেন না। সময় নিয়ে অল্প করে খেতে হবে। সারাদিন খালি পেটে থাকার পর রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কম থাকে। ইফতারিতে দ্রুত খাবার খেতে থাকলে হঠাৎ করে অতিরিক্ত খাবারের কারনে রক্তে নিঃসৃত ইনসুলিনের কারনে রক্তে থাকা অবশিষ্ট গ্লুকোজও শেষ হয়ে যায়। ফলে আমরা খুব ক্লান্তি বোধ করি।

ইফতারিতে মিস্টি জাতীয় খাবার খাবেন:

সারাদিন রোজা রাখার পরে শরীর অল্প সময়ের মাঝ শক্তি খোঁজে। ইফতারিতে মিস্টি জাতীয় খাবার খুব দ্রুত শরীরে শক্তি যোগায়। খেজুরের গ্লুকোজ খুব দ্রুত শরীরে শোষিত হয়। অন্যান্য মিস্টি জাতীয় খাবার যেমন জিলাপি খুব কম সময়ের মাঝে শক্তি দেয়।

ইফতারিতে বেশী করে ফল খাবেন:

মিস্টি ফলে রয়েছে ফ্রুক্টোজ যা শক্তি দেয়। রয়েছে বিভিন্ন খনিজ যা দেহের জন্য অনেক প্রয়োজনীয়। ফল খেলে শরীরে যাচ্ছে ভিটামিন, শক্তি, খনিজ পদার্থ, আঁশবার ফাইবার ইত্যাদি। পেপে, কলা, আম যে ফলই খান না কেন সবগুলোই কোষ্ঠবদ্ধতা সারাতে খুব ভালো কাজ করে। তাই সাধ্যের মধ্যে বেশী করে ফল খাবেন।

খেতে পারেন দই-চিড়া:

ইফতারির পরে অনেকেই দই-চিড়া খেয়ে থাকেন। পেট রাখে ঠাণ্ডা, দ্রুত সহজে হজম হয়। চিড়ার রয়েছে এসিডিটি কমানোর ক্ষমতা, দই খুব সহজেই পরিপাক হয়।

হালিম খেলে কেমন হয়ঃ

হালিম খুব ভালো একটি খাবার যা আমিষের চাহিদা মেটাবে। তবে নানা রকম ডাল দিয়ে রান্না হয় এবং মশলার ব্যবহারও বেশী হয়ে গেলে সেটা হজমে ঝামেলা করতে পারে। বুঝেশুনে, নিজের অবস্থা বুঝে খেতে পারেন।

ছোলা-মুড়ি না খেলে ভালো লাগে না:

ছোলা-মুড়ি খাবেন না কেন? অবশ্যই খাবেন তবে ছোলাতে বেশী মশলার ব্যবহার একে গুরুপাক করে দিতে পারে। মুড়িতে কোন আপত্তি নেই, এটা বুক জ্বালা, এসিডিটি কমায়।

মাংসের মেনু দেখলে কি করবো:

উপাদেয় খাবার দেখলে খেতে ইচ্ছে করবেই, এটাই স্বাভাবিক। এসব খাবারে মশলা, তেলের পরিমাণ বেশী থাকে যা স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও ভালো নয়। বাসায় একবেলা মাছ খাওয়ার চেষ্টা করুন, আরেক বেলা না হয় মাংস খেলেন। খাবারে ভেরিয়েশন না আনলে রোজায় রুচি থাকবে না।

ডিম ও দুধের ব্যাপারে কি হবেঃ

দুধের ব্যাপারে কোন বিধিনিষেধ নেই। সেহেরীতে দুধ খেয়ে থাকেন প্রায় সবাই। সারাদিনের উপোষের পরে দুধ শরীরের ক্ষয় পূরণে অনেক সাহায্য করে। যাদের বয়স হয়েছে, রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেশী তারা কুসুম ছাড়া ডিমের সাদা অংশ খেতে পারেন, সমস্যা নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

March ২০২৩
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Feb    
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  

ফেসবুকে আমরা

বিভাগ

দিনপঞ্জিকা

March ২০২৩
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Feb    
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
%d bloggers like this: