ন্যাশনালডেস্ক,মাগুরানিউজ.কমঃ
দুর্ঘটনার ৪দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো কোনো হদিস মেলেনি মুন্সিগঞ্জের মাওয়ায় ডুবে যাওয়া পিনাক-৬ লঞ্চের।
শুক্রবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত উদ্ধার করা হয়েছে ৩৮টি লাশ। এর মধ্যে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে ২৩টি এবং শনাক্ত করা যায়নি ১৫টি লাশ।
মাওয়া ঘাটের স্থাপিত মুন্সিগঞ্জ জেলা পুলিশ কন্টোল রুম ও শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্থা (ওসি/তদন্ত) মুজিবুর রহমান সর্বশেষ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।খবর-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম।
বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির স্ক্যানার ব্যবহার করেও মিলছে না পদ্মায় ডুবে যাওয়া পিনাক-৬ লঞ্চটির সন্ধান। কান্ডারী-২ এর পাশাপাশি শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে লঞ্চ অনুসন্ধানে যোগ দেয় চট্টগ্রাম থেকে আসা অত্যাধুনিক প্রযুক্তির জরিপ-১০ জাহাজ।
তথ্য মতে, জরিপ-১০ আকারে ছোট হলেও এর কার্যক্ষমতা বেশি। চলার পথে দুই পাশে প্রায় ৩শ’ মিটার পর্যন্ত স্ক্যান করতে পারে। পাশাপাশি পানির নিচে পলিমাটি ও কাদামাটিতে ৭০ মিটার এবং বালি মাটিতে ১৮ মিটার গভীর পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ চালানোর ক্ষমতা রয়েছ এর।
এদিকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত উদ্ধার করা হয়েছে ৩৮ জনের লাশ। এদের মধ্যে ২৩ জনের পরিচয় জানার পর লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক সাইফুল হাসান বাদল।
সর্বশেষ দুপুর পৌনে ১২টার দিকে মাওয়ার পদ্মা নদী থেকে কোস্টগার্ডের একটি লাশ উদ্ধার করে। এর আগে শুক্রবার দিবাগত রাত ১টার দিকে বরিশালের হিজলা উপজেলার মেঘনা নদী থেকে ৩টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১জন পুরুষ, ১জন নারী ও ১জন কন্যা শিশু।
পদ্মা নদীর মাওয়া-কাউরাকান্দির এলাকার ৫০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে খোঁজ করলেও কোনো আলামত খুঁজে পায়নি উদ্ধার কাজে নিয়োজিতরা।
বিআইডব্লিউটিএ, কোস্টগার্ড, নেভি, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ একযোগে উদ্ধার তৎপরতা চালালেও শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত লঞ্চটি কোনো সন্ধান পায়নি উদ্ধারকারী জাহাজ কান্ডারি-২, সন্ধানী, তিস্তা, নৌবাহিনীর এলসিটি-০১২। খোঁজ পেলেই টেনে তোলার জন্য প্রস্তুত রয়েছে রুস্তম ও নির্ভীক।
বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীর ক্যাপ্টেন নজরুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে অত্যাথুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করেও এখন পর্যন্ত নিখোঁজ পিনাক-৬ এর খোঁজ মেলেনি। তবে আমরা এখনো উদ্ধার কাজ চালিযে যাচ্ছি। লঞ্চটি উদ্ধারের জন্য শুক্রবার সকালে জরিপ-১০ নামে একটি জাহাজ কাজ শুরু করেছে। এই জরিপ-১০ জাহাজে আধুনিক প্রযুক্তির মধ্যে রয়েছে মাল্টি ভিম সাইড স্কেনার, সাব বোটম প্রফাইল, সাইজ স্কেনার।
তিনি বলেন, নদীতে স্রোত বেশি থাকার কারণে এর কোনো আলামত খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে সম্ভাব্য স্থানে আমরা অনুসন্ধান চালাচ্ছি।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে কাওড়াকান্দি থেকে প্রায় আড়াইশ’ যাত্রী নিয়ে মাওয়া ঘাটে যাওয়ার পথে তীব্র স্রোতের কবলে ডুবে যায় লঞ্চ এমএল পিনাক-৬।
শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত পর্যন্ত মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় ৫টি, শরীয়তপুরে ৮টি, বরিশালে ৮টি, চাঁদপুরে ৪টি, ভোলায় ১১টি, লক্ষ্মীপুরে ১টি ও মাদারীপুরে ১টি লাশ উদ্ধার হয়েছে। স্বজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসনের তৈরি করা নিখোঁজের সর্বশেষ তালিকা অনুযায়ী এখনো ১২৬ যাত্রী নিখোঁজ রয়েছেন।
চার দিন পেরিয়ে গেলেও লঞ্চ উদ্ধার না হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন স্বজনহারা পরিবারের সদস্যরা। উদ্ধার অভিযান ঠিকভাবে হচ্ছে না বলেও প্রশ্ন তুলেছেন তারা।