বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষে সংলাপ: রাষ্ট্রপতি

নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুনের সঙ্গে বৈঠকে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেছেন, সংলাপের ব্যাপারে সরকারের কোন কার্পণ্য নেই; তবে তা হবে বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষে। বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশের

রাজনৈতিক পরিস্থিতিসহ নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি আব্দুল মোমেন। রাষ্ট্রপতি সংলাপের বিষয়ে বর্তমান সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করে বলেন, “গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা জোরদার করতে যে কোন বিষয়ের নিষ্পত্তির প্রধান অবলম্বন হচ্ছে সংলাপ। সংলাপের ব্যাপারে সরকারের কোন কার্পণ্য নেই। তবে কেউ যদি নির্বাচন বর্জন করে তাহলে সংলাপ হবে কীভাবে?”

জাতিসংঘ মহাসচিবও রাষ্ট্রপতির সঙ্গে এ বিষয়ে সহমত প্রকাশ করেছেন বলে জানান আব্দুল মোমেন।

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, “গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বর্জনটা কোনমতেই গ্রণযোগ্য নয়। কারণ নির্বাচনই হচ্ছে সরকার পরিবর্তনের একমাত্র উপায়।”

এ সময় রাষ্ট্রপতি মহাসচিবকে বলেন, “মেয়াদ শেষ হলেই বাংলাদেশের সকল গণতান্ত্রিক দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনের বিস্তারিত প্রক্রিয়া নিয়ে সরকার যে কোন ব্যক্তি বা দলের সঙ্গে সংলাপে রাজি আছে।”

দশম সংসদ নির্বাচনের আগে দুই নেত্রীকে সংলাপে বসাতে জাতিসংঘ থেকে বিভিন্ন মহলের তৎপরতা থাকলেও তা সফল হয়নি।

এর মধ্যে একবার বিএনপি চেয়ারপারসনকে টেলিফোন করে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। কিন্তু হরতালের কারণ দেখিয়ে ওই সময় আলোচনায় খালেদা রাজি না হলে ওই উদ্যোগও আর গড়ায়নি।

মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠকের আগে জাতিসংঘ সদর দপ্তর পরিদর্শন করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।

মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠকের আগে জাতিসংঘ সদর দপ্তর পরিদর্শন করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।

এরপর বিএনপির বর্জনের মধ্যে দশম সংসদ নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পর বিএনপি নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগাম নির্বাচনের দাবিতে সংলাপ চেয়ে আসছে বিএনপি।

স্থানীয় সময় বিকাল ৪টা থেকে ৫০ মিনিটের ওই বৈঠকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের সেনা সদস্যদের অবদানের প্রশংসা করেন জাতিসংঘ মহাসচিব।

বান কি-মুন বলেন, “গোলযোগপূর্ণ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ যে অবদান রেখে চলেছে, সেজন্য আমরা বাংলাদেশের কাছে গভীরভাবে ঋণী।”

140620-president_350_176রাষ্ট্রপতি শান্তিরক্ষা মিশনে ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ বাড়ানোর অনুরোধ জানান।

আবদুল হামিদ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বর্তমান সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা তুলে ধরে বলেন, “বাংলাদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় অপরাধীদের ছাড় দেয়া হচ্ছে না। মানবতাবিরোধী অপরাধী, সন্ত্রাস, অপহরণ, গুম ইত্যাদি অপরাধে জড়িতদের শাস্তি পেতেই হচ্ছে। হরতাল-অবরোধের নামে যারাই ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিল তারাও রেহাই পাচ্ছে না।”

“অপরাধীদের বাঁচাতে কেউ কেউ নানা জায়গায় তদবির শুরু করেছে। কিন্তু কোন লাভ হবে না। বাংলাদেশ এ ব্যাপারে কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে এগোচ্ছে।”

আলোচনার এক পর্যায়ে জাতিসংঘ মহাসচিব জলবায়ু পরিবর্তন ঝুঁকির বিষয়টি তুলে এনে বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের আশংকা দূর করা সম্ভব না হলে সামনে সবচেয়ে ভয়ংকর পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণতাপূর্ণ নেতৃত্বে ইতোমধ্যেই যে সব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে তা সত্যি প্রশংসনীয়।”

বৈঠকের আগে রাষ্ট্রপতি জাতিসংঘ সদর দপ্তর ঘুরে দেখেন। তখন সিকিউরিটি কাউন্সিলের একটি বৈঠক চলছিল, সেখানেও কিছু সময় কাটান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

March ২০২৩
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Feb    
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  

ফেসবুকে আমরা

বিভাগ

দিনপঞ্জিকা

March ২০২৩
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Feb    
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
%d bloggers like this: