মাগুরানিউজ.কমঃ
বাংলার ঘরে ঘরে ঈদের আনন্দ। উৎসব এখন শহরের চেয়ে গ্রামে বেশি। গ্রামে ঈদের আনন্দে যোগ দিয়েছেন নগরের বাসিন্দারা।
যত ভোগান্তিই হোক বাড়ি ফেরা গেছে, এই আনন্দই এখন সবার চোখে মুখে। পরম আনন্দে ঈদ কাটাচ্ছেন রাজধানী ছেড়ে আসা লাখো নগরজীবী মানুষ। উৎসবমুখরতার সঙ্গী স্বজনদের কাছে পেয়ে যেন সব অপ্রাপ্তি আর ক্লান্তি ভুলে মেতে উঠছেন শেকড়ের সুকোমল মায়ায়।
এদেরই একজন সৈয়দা লাবিবা। মাগুরার নিজনান্দুয়ালী গ্রামের বাসিন্দা তিনি। পড়েন মেডিকেল কলেজে। পরীক্ষার ব্যস্ততায় গত রমজানের ঈদ করেছেন ঢাকায়। তবে এবার আগেভাগেই রাজধানী ছেড়ে বাড়িতে ঈদ করছেন।
গ্রাম আর শীতল হাওয়ায় চপ্পল পায়ে এবাড়ি ওবাড়ি করেই কাটছে ঈদের দিন। আর কোরবানির গরু জবাই দেখা নিয়েও মেতে আছেন বলে জানান মেডিকেল ছাত্রী লাবিবা।
সাজেদুল ইসলাম পড়ালেখা করেন জাপানে। তার বাবা-মা ভাইবোন থাকেন ঢাকার গুলশানে। পরিবারের সঙ্গে সব ঈদ গ্রামের বাড়িতেই করা হয় বলে জানান।
মাজেদুল গত সপ্তাহে ঢাকায় এসেছেন। নিজেদের গাড়ি আছে বলে বাস বা ট্রেনের ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয় না। এজন্য ঈদের ঠিক আগের দিন তারা গ্রামের বাড়ি মাগুরাতে চলে এসেছেন।
তিনি বলেন, রাজধানীর প্রায় সব মানুষের গন্তব্য গ্রাম। একটি উৎসবকে কেন্দ্র করে বিশ্বের আর কোথাও এভাবে এত মানুষ একসঙ্গে গ্রামমুখী হয় কিনা আমার জানা নেই।
ধূলার শহর ঢাকার লাখো মানুষ এখন ঘুরে বেড়াচ্ছেন সবুজের বাংলায়। সবুজের নিবিড় ছোঁয়ায় হয়তো থাকা হবে আরও দু’-একদিন। তারপর ফিরতে হবে নাগরিক ইট-কাঠের ভিড়ে।
এটাই মানতে কষ্ট হয় ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধা ওয়াহিদা রহমানের। ছেলে একজন ব্যাংকার, থাকেন ঢাকার মতিঝিল এলাকায়।
তার ভাষায়, ঢাকায় পাড়া-পড়শী নেই। মানুষ যে কেমন করে যুগ যুগ ঢাকায় কাটিয়ে দিচ্ছে! এখানে পুকুরঘাট, টাটকা মাছ, সবজি এসব তো ঢাকাবাসীরা পায় না।
নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানজিম হোসাইন বলেন, ঈদের আনন্দের কাছে দীর্ঘ জ্যাম আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট সংগ্রহের কষ্ট যেন ম্লান হয়ে গেছে।
আজিজা ও আমিরা দুই বোন পড়ালেখা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।
জানান, আসলে কোরবানি ঈদের মজা গরু কোরবানিতে। বাবা নিজের হাতে কোরবানি করেন। আমরা ভাইবোনরা পাশে দাঁড়িয়ে দেখি। আর বিকেল হলে বেড়াতে বের হওয়াও অনেক আনন্দের।