মাগুরানিউজ.কমঃ
মৃৎপণ্যে ব্যস্ততা চলছে মাগুরার নহাটার পালপাড়ায়। মাটির হাড়ি-পাতিল তৈরির পাশাপাশি এখানে বানানো হয় বিভিন্ন ধরনের পুতুল, হাতি, ঘোড়া, বাঘ, ভাল্লুক, জেব্রা, জিরাফ, খরগোস, ময়না, টিয়া, দোয়েল, ময়ূর, মাছসহ নানা ধরনের শো-পিস। মাটির তৈরি নিষ্প্রাণ প্রতিটি জিনিস শৈল্পিক হাতের ছোঁয়া আর রং-তুলিতে যেন জীবন্ত হয়ে উঠেছে।
পালপাড়ার মৃৎশিল্পী সুশান্ত পাল জানান, বৈশাখে মাগুরাসহ পাশের বিভিন্ন জেলায় অনুষ্ঠিত হয় গ্রামীণ মেলা। এসব মেলায় পুতুল, পশু-পাখি, শো-পিসসহ মাটির তৈরির সামগ্রী ক্রেতাদের প্রধান পছন্দ। কম দামে বাজারে প্লাস্টিকের পুতুলের আধিক্য ও মাটির পুতুল তৈরির রঙের দাম বাড়ার কারণে এখন আর মৃৎপণ্যে আগের মতো লাভ হয় না বলে জানান সুশান্ত পাল।
ওই গ্রামের রাধারানী পাল ও বন্দনা পাল জানান, বাড়ির পুরুষ সদস্যদের সঙ্গে তারাও মাটির পণ্য তৈরি করে থাকেন। তবে আগে গৃহস্থালীর কাজ সেরে অবসরে এগুলো তৈরি করতেন।উজ্জ্বল পাল জানান, এক সময় জেলার পাল সম্প্রদায়ের কয়েক হাজার লোক এ পেশায় জড়িত ছিল। সে সময় পালপাড়ার প্রতিটি ঘরেই পোড়া মাটির নানা পণ্য তৈরি হতো। কাঁচা মাটির সোদা গন্ধে ভরে থাকতো সারা পাড়া। কিন্তু আধুনিক প্রযুক্তি প্রসারে এখন এই পেশায় চলছে নানা সংকট। অনেকে পেশা পরিবর্তন করেছেন। তারপরও বংশপরম্পরায় চলে আসা এই শিল্পটিকে ধরে রাখতে কেউ কেউ এখনো চালিয়ে যাচ্ছে সংগ্রাম।
মাগুরার সদর, শ্রীপুর, শালিখা এবং মহম্মদপুরে দেড়শতাধিক পরিবার এখনো মৃৎশিল্পের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। উপযুক্ত মূল্য, পেশাগত সম্মান দিয়ে পৃষ্ঠপোষকতা করা হলে বাঙালির ঐতিহ্যবাহী এই পেশাটি টিকে থাকতে পারতো বলে উন্নয়নকামী মাগুরাবাসী মনে করেন।