মাগুরানিউজ.কম:
মাগুরায় মাতৃগর্ভে গুলিবিদ্ধ শিশুটিকে ডাক্তাররা নাম দিয়েছেন ‘বুলেটকন্যা’। আর ‘বুলেটকন্যা’র বয়স আজ দশদিন। মাতৃদুগ্ধ বঞ্চিত দুর্বল এই শিশুটিকে বিকল্প উপায়ে তার মায়ের দুধ পান করানো হয়েছে। এই শিশুটির জন্ম জীবন সবই বিস্ময়কর ঘটনার ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। ১ আগষ্ট বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ দিবস, আর এদিনই সে জন্মের পর প্রথম মায়ের দুধ পান করতে পারলো।
অস্ত্রোপচারের পর তাকে ৭২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের স্পেশাল কেয়ার অব বেবি ইউনিট বা স্ক্যাবো-তে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। চিকিৎসকরা ‘মাগুরানিউজ’কে জানিয়েছেন, শিশুটির অবস্থা এখন স্থিতিশীল তবে এখুনি নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।
শিশুটির গুলিবিদ্ধ আহত মা নাজমা বেগমও ভর্তি আছেন একই হাসপাতালের গাইনি বিভাগের ২১২ নম্বর ওয়ার্ডে। বৃহস্পতিবার রাতে মাগুরা থেক ঢাকায় আসা শিশুটির গুলিবিদ্ধ মা সামান্য শ্বাস কষ্টে ভুগছেন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাতে শিশুটিকে স্ক্যাবো-তে পাঠানোর পর ৭২ ঘণ্টা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখেন চিকিৎসকরা। আজ শনিবার শিশুটির শারীরিক অবস্থা ও চিকিৎসা সম্পর্কে ঢামেক এর সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. খাজা আব্দুল গফুর ‘মাগুরানিউজ’কে বলেন, ওর অবস্থা আগের মতোই অর্থাৎ স্থিতিশীল আছে। তবে প্রি-ম্যাচিউর শিশুটি গুলিতে জখম এবং জন্ডিস আক্রান্ত হওয়ায় এখনো তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। বিকল্প উপায়ে ওর মায়ের দুধ সংগ্রহ করে শিশুটিকে পান করানো হয়েছে। শিশুটির জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানান তিনি।
শিশুটির চিকিৎসার দায়িত্ব প্রাপ্ত নবজাতক বিশেষজ্ঞ ডা. আবিদ হোসেন মোল্লা ‘মাগুরানিউজ’কে জানান, ঢামেক-এ শিশুটির জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নবজাতক বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদেরও অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।
গুলির আঘাতে শিশুটির ক্ষতিগ্রস্থ ডান চোখ নিয়ে চিকিৎসকরা শঙ্কিত আর তার হাতের কবজিতেও জখম রয়েছে বলে জানালেন তারা। স্পেশাল কেয়ার বেবি ইউনিটে স্বাভাবিকের চেয়ে কম ওজনের এই শিশুটি নিবিড় পরিচর্যায় রাখা হয়েছে। অন্যসব জটিলতার সাথে জন্ডিসের জন্য চলছে ফটো থেরাপি।
এদিকে সন্তানের সুস্থতার সংবাদ শুনতে হাসপাতালে অধীর অপেক্ষায় আছেন মা নাজমা বেগম ও বাবা বাচ্চু ভূঁইয়া।