৫ অক্টোবর- মাগুরায় রাজাকারদের নির্মমতার চরম দৃষ্টান্ত স্থাপন

মাগুরানিউজ.কমঃ

mnবিশেষ প্রতিবেদক-

আজ ৫ অক্টোবর। মুক্তিযুদ্ধের সময় এই দিনে পাকবাহিনী এবং রাজাকারদের নির্মম অত্যাচারে  নিহত হন বিপ্লবীকন্যা লুৎফুন্নাহার হেলেন।

দেশের যে সব বীরকন্যার রক্ত ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে একাত্তরের গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধ সফল হয়েছিল তাদেরই একজন লুৎফুন্নাহার হেলেন। হেলেন ছিলেন মাগুরা শহরের অন্যতম শিক্ষিত, সমাজ সচেতন এবং প্রগতিশীল পরিবারের এক বিপ্লবী কন্যা। তাঁর বাবার নাম মরহুম ফজলুল হক, মায়ের নাম মরহুমা সফুরা খাতুন। বড় ভাই-এর নাম মাহফুজুল হক নিরো। যিনি মাগুরাতে ‘নিরো প্রফেসর’ হিসেবে সবচেয়ে পরিচিত। স্কুল জীবন থেকেই শহীদ হেলেন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন-এর কর্মী হিসেবে ছাত্র রাজনীতি শুরু করেন। একসময় মাগুরা মহকুমা শাখার সভানেত্রী হন। মেধাবী ছাত্রী হেলেন ১৯৬৮ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। এরপর মাগুরা গার্লস স্কুলে শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।

মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে হেলেন নিজের বিশ্বাস আর ভাবনার প্রতি অবিচল থেকে স্বাধীন দেশ করার লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন। অক্টোবর মাসের শুরুর দিকে মাগুরার তৎকালীন মোহম্মদপুর থানার কোনো এক গ্রামে আবস্থানকালে রাজাকার ও আলবদর চক্রের গুপ্তচররা তার গোপন অবস্থানের কথা ফাঁস করে দেয়। অতঃপর চরমভাবে ঘৃণিত রাজাকার রিজু-কবীরের নেতৃত্বধীন একটি দলের হাতে ধরা পড়েন হেলেন। সে সময় তার কোলে ছিল শিশুপুত্র (মাত্র চার মাস বয়সী, এখন আমেরিকাতে থাকে) দিলীর।

পাষন্ড রাজাকাররা হেলেনকে ধরে এনে মাগুরা শহরে স্থাপিত পাকসেনাদের ক্যাম্পে নিয়ে আসে এবং সেখানে উর্ধ¦তন পাকসেনাদের হাতে তাঁকে তুলে দেয়। পাকসেনারা হেলেনের শিশুপুত্র দিলীরকে হেলেনের পিতা মাতার কাছে ফেরত দিলেও শত অনুরোধ স্বত্ত্বেও হেলেনকে ফেরত দেওয়া থেকে বিরত থাকে। এই ঘটনা পুরো মাগুরাবাসীর মনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করলেও সেসময় রাজাকারদের ভয়ে মুখ খুলতে কেউ সাহস করেনি। এদিকে পাকসেনাদের ক্যাম্পে নেওয়ার পর হেলেনার ওপর অকথ্য নিপীড়ন নির্যাতন চালানো হয়। একসময় তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

এরপর আরো নির্মমতার পরিচয় দেয় পাকসেনা এবং তাদের পা চাটা রাজাকার রিজু কবীর চক্র। ৫ অক্টোবর হেলেনার মৃতদেহ পাকসেনাদের জীপের পেছনে বেঁধে শহর দিয়ে টেনেছেঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। আর এভাবেই টানতে টানতে সেই ছিন্ন ভিন্ন রক্তেভেজা বীরকন্যার দেহটি খুনীরা মাগুরার নবগঙ্গা নদীতে ফেলে দেয়। মুক্তিযোদ্ধা হেলেন-এর মৃতদেহ আর কোনোদিন খুঁজে পাওয়া যায়নি। দীর্ঘ সময় অতিক্রান্ত হলেও মুক্তিযুদ্ধের বীরসেনানী শহীদ লুৎফুন্নাহার হেলেন হত্যার বিচার আজো হয়নি।

 

সুত্র- ইন্টারনেট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

March ২০২৪
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Feb    
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১

ফেসবুকে আমরা

বিভাগ

দিনপঞ্জিকা

March ২০২৪
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Feb    
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
%d bloggers like this: