মাগুরানিউজ.কমঃ
মুরগির বাচ্চা ও খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় শালিখায় পোল্ট্রি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত প্রায় শতাধিক খামারি বিপাকে পড়েছে। দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা পরিবর্তনে পোল্ট্রি খামার গ্রাম-গঞ্জে একটি নীরব বিপ্লব সৃষ্টি করেছে। উপজেলার যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ আছে ওইসব এলাকার পোল্ট্রি ফার্মের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। আবার যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ নেই সেখানেও হারিকেন ও হ্যাজাকের আলো দিয়ে পোল্ট্রি ফার্ম করা হয়েছে।
এলাকার শত শত বেকার যুবক, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সচ্ছল ব্যক্তিরাও প্রশিক্ষণ নিয়ে এনজিও এবং বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করে ছোট-বড় ও মাঝারি ধরনের খামার তৈরি করে এ পেশায় নিয়োজিত হয়েছে।
বয়রা গ্রামের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ছরোয়ার হোসেন দীর্ঘদিন থেকে পোল্ট্রি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তার খামারে ১ হাজার মুরগি রয়েছে।
হাজারাহাটী গ্রামের আলমগীরের ১ হাজার মুরগি, জুনারী গ্রামের কেরামত আলীর ১ হাজার মুরগিসহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ছোট-বড় মিলিয়ে শতাধিক মুরগির খামার রয়েছে।
বাচ্চা, খাবার ও ওষুধের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ছোট ও মাঝারি ব্রয়লার খামার মালিকরা।
খামার মালিকরা জানান, বর্তমানে একটি বাচ্চার মূল্য ৬০ টাকা। ৫০ কেজি ওজনের খাদ্যের বস্তার দাম ১৯০০ থেকে ২ হাজার টাকা। একটি বাচ্চার পেছনে খাবার, ওষুধ ও শ্রমিক বাবদ দৈনিক ৪ টাকা ব্যয় হয়। ৩০ দিনের বাচ্চাসহ ব্যয় হয় ২১০ টাকা। ৩০ দিনে একটি বাচ্চার ওজন হয় প্রায় দেড় কেজি। যার বর্তমান বাজারমূল্য ১৯৫ টাকা। ফলে প্রত্যেক খামারের মালিককেই লোকসান দিতে হচ্ছে।
অনেকেই বিভিন্ন এনজিও ও বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে খামার করেছে। তারা এখন ঋণ শোধ করতে পারছে না। অনেকে লোকসানের ভয়ে এ ব্যবসা গুটিয়ে অন্য ব্যবসায় চলে যাচ্ছে। গত ২ বছরে লোকসান হওয়ায় শতাধিক খামার বন্ধ হয়ে গেছে। খামার মালিকদের দাবি, সরকার বাচ্চা, খাদ্য ও ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারলে আগামীতে গ্রামাঞ্চলে ক্ষুদ্র পোল্ট্রি শিল্পে ধস নামবে। এর ফলে এলাকার শত শত খামার ব্যবসায়ী বেকার হয়ে পড়বে।